কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীতে হুহু করে বাড়ছে পানি। গতকালের তুলনায় পদ্মায় আজ পানি বেড়েছে ৪ সেন্টিমিটার। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। জেলার সীমান্তবর্তী দৌলতপুর উপজেলার দুই ইউনিয়ন রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারির প্রায় ২০ হাজার পরিবারের অর্ধ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায় পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে অন্তত ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তলিয়ে গেছে চলাচলের রাস্তা ও বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি।
জানা গেছে, গেল এক সপ্তাহ ধরে কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। সেই সঙ্গে নিম্নাঞ্চলে বাড়ছে আতঙ্ক। খেয়ে না খেয়ে, অনাহারে এক-একটি দিন নির্ঘুম কাটছে বাসিন্দাদের।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্যমতে, গতকাল পর্যন্ত কুষ্টিয়ার পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমার এক মিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও আজ নতুন করে বেড়েছে আরও ৪ সেন্টিমিটার পানি। ফলে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা দৌলতপুরের চিলমারি ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা এখন পানিবন্দি। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দুর্ভোগ বেড়েছে গৃহপালিত গবাদিপশুরও। পানিবন্দি এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ রাখা হয়েছে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান। তলিয়ে গেছে চলাচলের রাস্তা ও ৫৭৩ হেক্টর চরের আবাদি ফসলি জমিও।
পানিবন্দি স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বন্যার পানিতে চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। মাছ ভেসে গেছে। গবাদি পশু নিয়েও তাদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা জানান, বন্যার পানির কারণে একমাসের বেশি সময় স্কুল বন্ধ আছে।
এদিকে দুর্ভোগ বাড়লেও পানিবন্দি এলাকাগুলোতে এখনও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন পানিবন্দি মানুষ।
দৌলতপুর চেয়ারম্যান রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ সিরাজ উদ্দিন মন্ডল বলেন, ধান-সবজি সব বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাহায্যে সহযোগিতা আসেনি।
তবে স্থানীয় প্রশাসন বলছে, পানিবন্দি মানুষের পাশে রয়েছে তারা। দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ-সহায়তাও।
কুষ্টিয়া দৌলতপুর নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, আমরা শুকনো খাবার সঙ্গে এনেছি। বিভিন্ন ব্যক্তি এবং পরিবারকে খাবারগুলো দেওয়া হচ্ছে। ব্যাপক হারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছুটা শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ সব বাঁধ এলাকা বাড়তি নজরদারিতে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাও সজাগ রয়েছেন।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, পানি বৃদ্ধি নিয়ে আমরা সজাগ আছি। এ নিয়ে কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়ার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমা ১৩.৮০ সেন্টিমিটার। বর্তমানে বিপদসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।