নড়াইলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা সামনে রেখে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। দেবী দুর্গার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ ফুটিয়ে তুলতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে তাদের কর্মব্যস্ততা।
শারদীয় দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে নড়াইলে প্রতিটি পূজা মণ্ডপে চলছে সাজসজ্জা, প্রস্তুতি আর আনন্দের জোয়ার। কয়েকদিন পর পূজার ঘণ্টাধ্বনি বেজে উঠলে ভক্ত-ভক্তিমায় মুখরিত হয়ে উঠবে গোটা জেলা।
পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ৩টি উপজেলায় এ বছর মোট ৫২৪টি মণ্ডপে পূজিত হবেন দেবী দুর্গা। জেলার সদর উপজেলায় ২৩৯টি, সদরের পৌরসভায় ৩৮টি, লোহাগড়া উপজেলায় ১৪৪টি (এর মধ্যে পৌরসভায় ৩৮টি) এবং কালিয়া-নড়াগাতী উপজেলায় ১৪১টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে নড়াইল জেলার বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ ও প্রতিমা তৈরির কারখানা ঘুরে দেখা গেছে বাঁশ, কাঠ, সুতলি, খড় ও কাদামাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা। ইতোমধ্যে দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশসহ অন্যান্য মূর্তি গড়ার কাজ প্রায় শেষ। এখন চলছে রঙ-তুলির আঁচড়ে সাজসজ্জা ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ।
প্রতিমা শিল্পী নিত্যানন্দ কর্মকার বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিমার চাহিদা অনেক বেশি। তাই দিন-রাত কাজ করতে হচ্ছে। শুধু নড়াইল নয়, দেশের বিভিন্ন জেলায়ও প্রতিমা পাঠানো হয়। আশা করছি এবার লাভও ভালো হবে।
শিল্পীরা বলছেন, উপকরণের দাম বাড়ায় লাভ কম হচ্ছে। অপরদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে পূজা আয়োজকদের ব্যয়ও বেড়েছে। তবুও উৎসবকে ঘিরে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ভরপুর আয়োজক ও ভক্তরা।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট নড়াইল জেলা শাখার সদস্য সচিব স্বপন ঘোষ বলেন, নড়াইলে প্রায় ৫২৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। শ্রেণি বা উঁচু-নিচুর বিভেদ ভুলে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ একত্রিত হয় বলেই দুর্গাপূজাকে সার্বজনীন উৎসব বলা হয়।
নড়াইলের জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান বলেন, আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব পালনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়েও কঠোর নজরদারি থাকবে।
নড়াইলের নব-নিযুক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রবিউল ইসলাম জানান, প্রতিটি মণ্ডপে কঠোর নিরাপত্তা থাকবে। পুলিশ, আনসার ও সেনাবাহিনী টহল দেবে। ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।