‘বেকায়দা চা ঘর’ স্বাদ ও সৃজনশীলতার নতুন ঠিকানা

ডিজিটাল কনটেন্টের ব্যস্ততার মাঝেই ঝিনাইদহের মহেশপুরে তরুণদের আড্ডা, স্বাদ ও সৃজনশীলতার নতুন ঠিকানা হয়ে উঠেছে “বেকায়দা চা ঘর” নামের একটি চায়ের দোকান।

উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ভৈরবা বাজারে ৮ জন উদ্যমী কনটেন্ট ক্রিয়েটর মাত্র ১৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন অনন্য এই চা ঘরটির।
 
মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে তাদের স্বপ্ন আজ বাস্তব সাফল্যের চমক দেখাচ্ছে। এখন প্রতিদিন এখানে ১৩ থেকে ১৫ হাজার টাকার বেঁচা-কেনা হয়, আর দিনে ১ হাজার থেকে ১২০০ জন ক্রেতা চায়ের কাপে চুমুক দিতে ছুটে আসেন দূর-দুরান্ত থেকে।

অনলাইন দুনিয়ায় তাদের জনপ্রিয় কনটেন্ট ব্র্যান্ড “বেকায়দা চা ৪২০”, যা থেকে দোকানের নাম দেওয়া কনটেন্টের বিখ্যাত ডায়লগ “দুনিয়া পৃথিবী বাবা, বেকায়দা!” এখন হয়ে উঠেছে এই চা ঘরের অঘোষিত স্লোগান।
তরুণ উদ্যোক্তা সম্রাট হোসেনসহ ৮ জনই সমানভাবে মালিক ও উদ্যোক্তা। শুধু চা নয়, দোকানের প্রতিটি ইঞ্চিতে মিশে আছে তরুণদের সৃজনশীলতা, গ্রামীণ আড্ডা সংস্কৃতি আর বন্ধুত্বের গল্প।

তরুণ উদ্যোক্তা সম্রাট হোসেন জানান, আমরা আট বন্ধু মাত্র ১৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম এই চায়ের দোকানটি। আল্লাহর রহমতে এখন বেঁচা-কেনা ভালো। প্রতিদিন এখানে ১৩ থেকে ১৫ হাজার টাকার বেঁচা-কেনা করে থাকি।

অনিক হোসেন নামের এক তরুণ বলেন, আমি “বেকায়দা চা ঘর” নামের দোকানটিতে প্রায় প্রতিদিনি চা খেতে আসি। খুব ভালো লাগে এখানকার দুধ চা ও বিশেষ রুটি। এখানকার পরিবেশও ভালো।
এখানে প্রতিদিন গড়ে ৮০ কেজি দুধ দিয়ে তৈরি হয় বিশেষ চা। আর দোকানের সবচেয়ে আলোচনার বিষয় ৭২০টি পাউরুটি। রুটিগুলো পুড়িয়ে তার ওপর ঘি, কনডেন্সড মিল্ক, মধু, হরলিক্স, বাদামের গুঁড়া ও সাদা তিল মেখে পরিবেশন করা হয়। এই “বিশেষ রুটি” এতটাই জনপ্রিয় হয়েছে যে বাজারের মানুষ বলছেন, “ভৈরবায় এমন স্বাদের চায়ের দোকান এর আগে কখনও হয়নি!
 
হাস্যরসাত্মক কনটেন্টের পরিচিতি, গ্রামীণ পরিবেশে ধোঁয়া ওঠা চা, বিশেষ রুটির অতুলনীয় স্বাদ- সব মিলিয়ে “বেকায়দা চা ঘর” এখন ভৈরবা বাজারের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠেছে। এটি শুধু একটি চায়ের দোকান নয়, বরং হয়ে উঠছে গ্রামের তরুণদের নতুন সাংস্কৃতিক মিলনমেলা, যেখানে স্বাদ, আড্ডা ও সৃজনশীলতা একসঙ্গে ঘর বেঁধেছে।

প্রতিদিনের বাড়তি ভিড়ই বলে দিচ্ছে এই ৮ তরুণের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রাম বাংলায় নতুন উদ্যোক্তা সংস্কৃতির অনুপ্রেরণামূলক একটি দৃষ্টান্ত।