নড়াইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দীর্ঘসূত্রিতা ও অবহেলার কারণে দীর্ঘ আড়াই বছরেও শেষ হয়নি সদর উপজেলার আকদিয়া-নিরালি সড়কের সংস্কার কাজ। মাত্র আড়াই কিলোমিটার এই সড়কের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা।
নড়াইল এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে আইআরআইডিপি-৩ প্রকল্পের আওতায় আকদিয়া-নিরালি ২৫০০ মিটার (আড়াই কিলোমিটার) সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হয়। ২ কোটি ৩০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৫৬ টাকা চুক্তিমুল্যে কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফকির এন্টারপ্রাইজ। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দেড় বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও কার্পেটিং ও প্যালাসাইডিংয়ের (পাড় বাঁধাই) কাজ বাকি পড়ে আছে।
গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে দুটি প্রাথমিক ও দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি কলেজ, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন পরিষদ এবং একাধিক বাজারের মানুষ যাতায়াত করেন।
আফরিন আক্তার নামের এক স্কুল শিক্ষার্থী জানায়, ‘ধুলাবালির কারণে রাস্তা দিয়ে হাঁটাই দায়। আবার অল্প বৃষ্টিতেই কাদা হয়ে যায়, তখন স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়।’
সুজিত বিশ্বাস নামে এক ওষুধ ব্যবসায়ী বলেন, ‘দীর্ঘ তিন বছর ধরে এই রাস্তার বেহাল দশা। কোনো রোগী জরুরি ভিত্তিতে অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার উপায় নেই। ব্যবসায়িক কাজেও চরম ক্ষতি হচ্ছে।’
পারুল বেগম জানান, ‘যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় এলাকার ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিতে সমস্যা হচ্ছে। কেউ হঠাৎ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়া দুরূহ হয়ে পড়ে।’
কাজের ধীরগতি প্রসঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফকির এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কটি নদীর পাড় ঘেঁষে হওয়ায় বেশ কিছু জায়গায় ভেঙে গেছে। আমাদের করা প্যালাসাইডিংও নদীতে ধসে গেছে। আমি অফিসকে চিঠি দিয়েছি, তারা নতুন নকশা বা সমাধান দিলেই আমি কাজ শুরু করব।’
এ বিষয়ে নড়াইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার ইকরামুল কবীর বলেন, ‘সড়কটি নদীর পাড় ঘেঁষে হওয়ায় সেখানে অতিরিক্ত কিছু প্যালাসাইডিং প্রয়োজন। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পেলেই দ্রুত কাজটি শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।’