শেরপুরের বন্যাকবলিত এলাকায় গবাদি পশুর চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও বন্যার অজুহাতে গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধিসহ সরকারি সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ বানভাসীদের। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ।
১৯৮৮ সালের পর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখছে শেরপুরের সাধারণ জনগণ। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় নাজেহাল হয়ে পড়েছে জেলার মানুষ। গবাদিপশু নিয়ে বেশ বিপাকে রয়েছে বানভাসীরা। বাড়ি-ঘর ও গোয়ালঘরে পানি প্রবেশ করায় রাস্তার পাশে ও উঁচু স্থানে গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা কবলিতরা।
এছাড়াও বন্যার পানিতে সব তলিয়ে যাওয়ায় ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় গবাদি পশুর খাবার সংকটে রয়েছে বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন। সবজি খেতসহ মাঠ ডুবে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে ঘাসের অভাব। এ ছাড়া বাড়িঘরে পানি ওঠায় নষ্ট হয়ে গেছে খড়ের গাদা।
গাজীরখামারের করিম মিয়া বলেন, এবার বন্যায় সব শেষ। ধান সব শেষ। খড় কই পামু আর সব তো ঢুইবা আছে ঘাসও নাই। কামায় রোজগারও নাই যে গরুর খাবার কিনমু।
বালুরঘাটের হারুন বলেন, গরু-ছাগল নিয়া বিপদে পড়ছি। গরু রাস্তায় নিয়া রাখছি। রাতে পাহারা দিতাছি। গরুর খাদ্য খড় সব ডুইবা গেছে। টাকা পয়সাও নাই যে খাওয়া কিনমু। ওদেরও পেট আছে। অনেক কষ্ট করতাছে গরু ছাগল গুইল্লা।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক বন্যায় জেলায় ৪৩ হাজার গরু, ৪৬০ মহিষ, ৭১ হাজার ছাগল-ভেড়া, ৫ লাখ ৮ হাজার মুরগি ও ১৮ হাজার হাঁস ক্ষতির মুখে পড়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এবিএম আব্দুর রউফ জানান, প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গবাদিপশুর খামারিদের প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ ছাড়া খাদ্য সংকট নিরসনে দুর্গত এলাকায় ৩ টন গোখাদ্য বিতরণ করা হবে। এ বন্যায় জেলার ৬৬ জন খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দুর্গত এলাকাগুলোতে অনেক প্রাণী খাদ্য সংকটে পড়েছে এবং নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে।