চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় আবু সুফিয়ান সিজু (২৫) নামের এক যুবককে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় উমরপুর ঘাট এলাকায় এই নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ওই যুবকের দুই হাত ও এক পা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। বর্তমানে তিনি ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন।
আহত সিজু শ্যামপুর এলাকার বাজিতপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে। এই ঘটনায় সিজুর বাবা বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১২-১৫ জনকে আসামি করে শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে শাহ আলম ও আব্দুর রাজ্জাক নামে দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা স্থানীয়ভাবে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সিজু দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে তাকে দেড় ঘণ্টা ধরে খুঁটিতে বেঁধে কুপিয়েছে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। তার দাবি, পরিবারের এক সদস্যকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় বাধা দেওয়ায় তার ওপর এই হামলা চালানো হয়েছে।
অন্যদিকে, পুলিশের তথ্য অনুযায়ী আবু সুফিয়ান সিজু নিজেও একজন তালিকাভুক্ত ‘কিশোর গ্যাং’ লিডার। তার নামে থানায় চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি কোনো রাজনৈতিক মামলা নয়, বরং ব্যক্তিগত বা স্থানীয় বিরোধের জের হতে পারে।
এই ঘটনায় জামায়াতে ইসলামীর নাম জড়ানোর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটির শিবগঞ্জ উপজেলা শাখা। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, আহত সিজু একজন চিহ্নিত অপরাধী ও চাঁদাবাজ। তার ব্যক্তিগত অপকর্মের ফলকে রাজনৈতিক রূপ দিয়ে আসন্ন নির্বাচনের আগে জামায়াতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃতরা জামায়াত সমর্থক হলেও এই হামলার সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই বলে তারা দাবি করেন।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবির জানিয়েছেন, হামলার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয়ের চেয়ে তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।