নওগাঁ হারালো এক সূর্য সন্তানকে। প্রয়াত হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রগতিশীল রাজনীতিক ও সমাজসেবক কমরেড ময়নূল হক মুকুল।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বাদ যোহর নওগাঁ শহরের নওজোয়ান মাঠে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা শেষে কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার জানাজায় রাজনৈতিক সহকর্মী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, ক্রীড়ামোদী মানুষ ও সর্বস্তরের জনগণ অংশ নেন। তার মৃত্যুতে পুরো জেলায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
এর আগে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
কমরেড ময়নূল হক মুকুল ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সংগঠক এবং নওগাঁ জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে ছিলেন সোচ্চার।
তিনি ১৯৬৯ সালের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছেন নওগাঁ মহকুমা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক হিসেবে। এ সময় থেকেই তার সংগ্রামী জীবনের সূচনা, যা পরে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ণতা পায়।
রাজনীতি ছাড়াও ক্রীড়াঙ্গনেও ছিল তার উজ্জ্বল উপস্থিতি। তিনি ছিলেন রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনে নওগাঁ মহকুমা ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। একজন কৃতি ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে তিনি ক্রীড়ামোদী মানুষের কাছে ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়। পাশাপাশি তিনি ছিলেন নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী কেডি স্কুলের (কেডিয়ান) প্রাক্তন ছাত্র।
এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাসদ, জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদ, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন নওগাঁসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
তারা বলেন, কমরেড মুকুল ছিলেন এক সংগ্রামী জীবনের প্রতীক। তার আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বেঁচে থাকবে।