রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের পূর্ব রমাকান্ত এলাকার বিশু মিয়ার স্ত্রী বাড়ির পাশে পাটশাক তুলতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন দুই সন্তানের জননী কাওছারা বেগম। ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে ওই নারীকে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক ও পরিবারিক মানসিক চাপে ভুক্তভোগী নারী শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ জুন দুপুরে শ্বশুরবাড়ি সংলগ্ন একটি পাটক্ষেতে শাক তুলতে যান কাওছারা। পূর্ব থেকে পাটক্ষেতে ওৎ পেতে থাকা কয়েকজন যুবক তাকে ধরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে হুমকি দেয় অপর দুই যুবক। ভুক্তভোগী নারীকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও অনৈতিক প্রস্তাব দেন। রাস্তাঘাটে তাকে ঘিরে বলেন, ‘যদি কথা না শোনো, ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হবে।’ শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে ঘটনাটি তিনি তার শ্বশুরকে জানান।
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে গত সোমবার (৭ জুলাই) রাতে একটি উঠান বৈঠক হয়। সেখানে ওই নারী কাঁদতে কাঁদতে ঘটনার বর্ণনা দেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, শ্বশুর তাকে বলেন, ‘এমন কলঙ্ক নিয়ে কেন তুই বেঁচে আছিস?’ এমন মানসিক চাপে ওই নারীর আত্মহত্যা করেন।
পরদিন মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকালে পরিবারের লোকজন অনেক ডাকাডাকি করেও তার সাড়া না পেয়ে ঘরে ঢুকে দেখতে পায় সে ঘরের মেঝেতে অচেতন হয়ে পরে আছে। ওই সময় নিহতের হাতে কিছু ট্যাবলেট ছিল। পরে স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার সময় রাস্তায় তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর ভুক্তভোগীর পিতা গঙ্গাচড়া মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আল এমরান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।