জাফলংয়ের পাথর লুটের ঘটনায় অজ্ঞাত ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং এলাকায় সরকারি অনুমোদন ছাড়াই বিপুল পরিমাণ পাথর উত্তোলন ও লুটের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ১০০–১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতরা আনুমানিক ৪০ থেকে ৫০ হাজার ঘনফুট পাথর লুট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে, যার বাজারমূল্য কোটি টাকারও বেশি।

সোমবার (১৮ আগস্ট) রাতে উপজেলার ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আব্দুল মুনায়েম বাদী হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, চলতি মাসের ৭, ৮ ও ৯ আগস্ট একদল দুষ্কৃতকারী জাফলংয়ের গেজেটভুক্ত পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধ ও অননুমোদিতভাবে বিপুল পরিমাণ পাথর উত্তোলন করে চুরি করে নিয়ে যায়। এতে করে রাষ্ট্রীয় সম্পদের চরম ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমদ বলেন, এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। জাফলং এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি অসাধু চক্র অবৈধভাবে পাথর লুটপাট করে আসছে। গত বছরও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল এবং মামলা হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, এই মামলাকে আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ ও স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। যারা জড়িত, তাদের কাউকে ছাড়া হবে না। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন শুধু রাষ্ট্রীয় সম্পদ নয়, বরং পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্যের জন্যও হুমকি। এসব অপরাধ দমনে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

জাফলং, বাংলাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থান এবং পাথরের বৃহৎ ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত। তবে পরিবেশবিদরা দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ উত্তোলন ও চোরাচালানের কারণে পরিবেশগত বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন। তারা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে জাফলংয়ের জলজ প্রাণী, জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য চিরতরে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

জাফলংয়ের পাথর কোয়ারি নিয়ে অব্যাহত লুটপাট এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে শাস্তির মুখ না দেখা। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আগামী দিনে আরও ভয়াবহ পরিণতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এখন সময় এসেছে অপরাধীদের চিহ্নিত করে টেকসই পরিবেশ রক্ষা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় কঠোর অবস্থান নেওয়ার।