ট্রাইব্যুনালে হাজির ১৫ সেনা কর্মকর্তা, নিরাপত্তা জোরদার

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গোয়েন্দা সংস্থার গোপন সেল ‘টিএফআই’ (টাস্কফোর্স ফর ইন্টেলিজেন্স) ও ‘জেআইসি’তে (জয়েন্ট ইন্টেলোগেশন সেল) অমানবিক নির্যাতন, গুম এবং ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়িয়ে প্রিজনভ্যানে করে তাদের ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়। এসময় আসামিদের সাধারণ পোশাকে দেখা গেছে। প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে তাদের সরাসরি আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়।

সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনাল ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা লক্ষ্য করা গেছে। সেনাবাহিনী, র‍্যাব, বিজিবি এবং পুলিশের সমন্বয়ে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। সাধারণের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মোট তিনটি পৃথক মামলা হয়েছে। এতে মোট ২৮ জন আসামি, যার মধ্যে ২৫ জনই সাবেক বা বর্তমান সেনা কর্মকর্তা।

১. র‍্যাব সংশ্লিষ্ট গুম-নির্যাতন মামলা: এই মামলায় ১৭ জন আসামি। এর মধ্যে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, কামরুল হাসান, মাহাবুব আলম, কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান এবং র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লে. কর্নেল মশিউর রহমান, সাইফুল ইসলাম সুমন ও সারওয়ার বিন কাশেমকে। এই মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ, শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক রয়েছেন।

২. ডিজিএফআই সংশ্লিষ্ট মামলা: গুম-নির্যাতনের দ্বিতীয় মামলায় শেখ হাসিনা ও তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৩ জন আসামি। এর মধ্যে আজ হাজির করা হয়েছে ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকীকে। সাবেক ৫ জন ডিজিএফআই প্রধানসহ বাকিরা পলাতক বা আত্মগোপনে আছেন।

৩. জুলাই গণঅভ্যুত্থান মামলা: রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় ২৮ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লে. কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর মো. রাফাত-বিন-আলমকে হাজির করা হয়েছে।

ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে এবং আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ও পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে শুনানি হবে।