পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জিসান মির্জার নামে দুবাইয়ে থাকা এক কোটি চার লাখ ৭৯ হাজার দিরহামের দুটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তার নামে দুবাইয়ের দুটি ব্যাংক হিসাবের এক লাখ ৬২ হাজার দিরহামও অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ আদেশটি সোমবার (১২ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত থেকে দেয়া হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর আবেদন গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে। দুদকের উপ-পরিচালক জয়নাল আবেদীন এই আবেদনটি করেন।
দুদক অভিযোগ করেছে যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি তার জানানো আয়ের উৎসের বাইরে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেছেন এবং তা পাচার করেছেন। আদালতের দৃষ্টিতে, এটি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ধারা ২৭(১) অনুযায়ী একটি ফৌজদারি অপরাধ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, এই ধরনের অর্থ পাচার এবং সম্পত্তি হস্তান্তর থেকে জনস্বার্থে বিরত থাকতে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। তাই দুবাইয়ের ওই ফ্ল্যাটগুলোর মালিকানার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে এবং অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের স্থানান্তর প্রতিরোধের জন্য এসব সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে।
এই আদালত আদেশটি একটি ধারাবাহিক আইনি প্রক্রিয়ার অংশ। এর আগে, ৮ মে, একই আদালত বেনজীর আহমেদের মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে দুবাইতে থাকা একটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছিলেন। এটি একটি বড় পদক্ষেপ, যা সম্পত্তির বৈধতা এবং মালিকানার বিষয়ে স্পষ্টতা আনার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর দুদক সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে চারটি মামলা দায়ের করে। এই মামলা গুলোর মধ্যে ৭৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ছিল।
এ প্রেক্ষাপটে, দুদক এ মামলার তদন্তের মধ্যে দিয়ে সাবেক আইজিপি ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে।
এই পদক্ষেপ সরকারের দুর্নীতি বিরোধী অবস্থানের একটি দৃঢ় প্রতিফলন হিসেবে দেখা যাচ্ছে। এমনকি, বিদেশি সম্পত্তি এবং ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক কঠোর বার্তা দেয়া হয়েছে। এটি নিশ্চিত করতে সহায়ক হতে পারে যে, সরকারি কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারগুলো যাতে আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা বজায় রাখে এবং দেশের বাইরে অবৈধ সম্পত্তি গঠনে সম্পৃক্ত না হয়।