কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) ছাত্রলীগ উক্ত হামলায় সমর্থনের অভিযোগ, লাঠিসোঁটা নিয়ে ফেসবুকে ছবির প্রচারণা, ছাত্রলীগ নেতার ফেসবুক পোস্টে কমেন্টের জেরে বুটেক্স ক্যাম্পাস উত্তাল হয়ে উঠেছে। উক্ত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত লাঠিসোঁটা নিয়ে ছবিতে বুটেক্স ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বয়কট করা, ছাত্রলীগে পদপ্রত্যাশী জীবনবৃত্তান্ত প্রত্যাহারের হিড়িক পড়া, স্বেচ্ছায় রাজনীতি থেকে সরে আসার ঘোষণার পর এবার ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বিরোধী লেখা দেখা যায়।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাতে ‘বুটেক্স ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তন’ নামক ফেসবুক গ্রুপে ৪৮তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থীর পোস্টের কমেন্টে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা তৈরি হয়। ফেসবুক পোস্টে উক্ত ব্যাচের কোনো শিক্ষার্থী রাজনীতিতে সম্পৃক্ততা নেই উল্লেখ করে ক্যাম্পাসে সকল ধরনের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধে মত প্রকাশ করেন। উক্ত পোস্টের বুটেক্স ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান জয় চাকলাদারের কমেন্টকে হুমকিস্বরূপ আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদ জানান।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে বুটেক্স ছাত্রলীগের কার্যক্রম সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবগত হওয়ায় ছাত্ররাজনীতি নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। তারই জেরে বুধবার (১৭ জুলাই) ছাত্ররাজনীতি বন্ধের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমবেত হয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বিরোধী যেসব লেখা দেখা যায় তা হলো: পকেট গেইটে ‘ছাত্রলীগ প্রবেশ নিষেধ’, বিভিন্ন জায়গায় 'No Student Politics', ‘দালালমুক্ত বুটেক্স ক্যাম্পাস’ এবং ছাত্রলীগ নেতাকে ইঙ্গিত করে ‘৪৮ এসেছে চাকলাদার কই?’ পাশাপাশি ছাত্র সংসদের ভেতরে ছাত্রলীগের লোগো ও অনার বোর্ডের লেখা মুছে ফেলেন শিক্ষার্থীরা।
ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইমন জানান, আমাদের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি বুটেক্সকে ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তোলা। আমাদের আবাসিক হলগুলোর যে গেস্টরুম কালচার আছে সেটা ছাত্রলীগ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। এমন না শুধু আমরা ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করতে চাই। ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ আমরা কোনো রাজনৈতিক দল ক্যাম্পাসে চাচ্ছি না। ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির কারণে শিক্ষার্থীদের নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এগুলোর মধ্যে হলো ক্যাম্পাস ও হলের বাজে নিয়মকানুন, গেস্টরুম কালচার, জোর করে রাজনৈতিক মিছিলে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) তেজগাঁওয়ের তিব্বত-নাবিস্কো মোড়ে আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের হামলার শিকার হোন। উক্ত কোটা বিরোধী আন্দোলনে বুটেক্স, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করেন।