দাসত্বের সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি: শিক্ষা উপদেষ্টা

বিগত ফ্যাসিস্ট রেজিম যে দাসত্বের সংস্কৃতি চালু করেছিল, আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দলীয় লেজুড়বৃত্তির কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন অন্তবর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।

বুধবার (৩০ জুলাই) সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। 

এ সময় তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে তোমরা নিজেদেরকে আপন স্বকীয়তায় উপস্থাপন করবে এবং রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে, তা তোমরা নির্ধারণ করবে।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, জুলাই ২৪ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা জাতি হিসেবে পুনর্জন্ম লাভ করেছি। বিগত ১৭ বছর আমরা আমাদের নাগরিকত্ব সপে দিয়েছিলাম একটি ফ্যাসিবাদি সরকারের কাছে। যারা পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে দাসত্বের চুক্তি করেছিল। গুম, খুন, আয়নাঘর, বিচারহীনতার মধ্য দিয়ে চলছিল এই বাংলাদেশ। ছাত্র-জনতার এই অর্জনকে ম্লান হতে দেয়া যাবে না।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করছে বর্তমান সরকার। অংশীদারদের সঙ্গে বসে তাদের চাহিদা অনুযায়ী নীতিনির্ধারণ করতে হবে, পেশীশক্তির ব্যবহার রোধ করে সহনশীলতা ও সহমর্মিতার সংস্কৃতি চালু করতে হবে। নবীন শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমে নিজেদের সম্পৃক্ত করে নিজেদের মেলে ধরবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামিউল আহসান তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. এ. টি. এম. মাহবুব-ই-ইলাহী। এছাড়াও অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ছিলেন সিকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী বলেন, বিগত ২০২৪-এর জুলাইয়ে দেশ মাতৃকার গণতন্ত্র, মুক্ত সমাজ সৃষ্টিতে শিক্ষার্থীরা যেভাবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, রাইফেলের গুলিতে বুকের তাজা রক্ত ঝরিয়েছে, তার জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। দেশের বয়স ৫৪ বছর হলেও আক্ষরিক অর্থে দেশ এগিয়ে যায়নি। দেশকে এগিয়ে নিতে আজকের শিক্ষার্থীদের জুলাই ২৪-এর ন্যায় ভূমিকা রাখতে হবে।

সিকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম বলেন, সিকৃবি শিক্ষা, গবেষণা ও সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে অগ্রগতি সাধন করছে। সিকৃবিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি তোমরাও এই যাত্রায় আমাদের সহযাত্রী হবে। আমরা বিশ্বাস করি সীমিত সম্পদেও সীমাহীন সম্ভাবনা সৃষ্টি করা যায়, যদি থাকে দৃঢ় মনোবল ও নিষ্ঠা।