৬ দফা দাবিতে শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলন

চাকরির মেয়াদ অনুযায়ী বেতন-ভাতা নির্ধারণ ও পদোন্নতিসহ ছয় দফা দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে সরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল ইসলাম মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবিগুলো উপস্থাপন করেন শিক্ষক নেতারা।

লিখিত বক্তব্যে তারা জানান, সরকার সম্প্রতি জাতীয়করণকৃত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য ‘আত্তীকরণ বিধিমালা ২০২৪’ প্রণয়ন করলেও এতে রয়েছে একাধিক অসংগতি ও বৈষম্যমূলক ধারা, যা সংশোধন না হলে শিক্ষক সমাজের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা ব্যাহত হবে।

শিক্ষক-কর্মচারীদের ৬ দফা দাবি

১. আত্তীকরণ বিধিমালা ২০২৪-এর ১০ নম্বর ধারা সংশোধন ও পে-প্রোটেকশন নিশ্চিত করা।
২. কার্যকর চাকরির মেয়াদ অনুযায়ী বেতন-ভাতা নির্ধারণ ও পদোন্নতি প্রদান।
৩. আত্তীকরণ বিধিমালার বৈষম্যমূলক ১৩ নম্বর ধারা বাতিল করে বদলির সুযোগ চালু করা।
৪. কার্যকর চাকরিকালের ভিত্তিতে গ্রেডেশন তালিকায় অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা।
৫. সহকারী শিক্ষক (টেকনিক্যাল) পদটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জনবল কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করে ব্লক পোস্ট ধারণা বাতিল।
৬. ধারা ৫(৩) বাতিল করে আত্তীকরণ প্রক্রিয়ার সমতা নিশ্চিত করা।

শিক্ষক নেতারা বলেন, একই স্মারক ও তারিখে বিদ্যালয় সরকারিকরণ এবং একই বিধি অনুযায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েও বেতন নির্ধারণে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন অনেক শিক্ষক-কর্মচারী। কিছু প্রতিষ্ঠানকে পে-প্রোটেকশন সুবিধা দেওয়া হলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান এখনো এর বাইরে রয়ে গেছে।

তারা আরও জানান, দেশের ৩৬৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এখন পর্যন্ত জাতীয়করণ হয়েছে, যেগুলোর অধিকাংশের শিক্ষক-কর্মচারী এডহক নিয়োগপ্রাপ্ত। এর মধ্যে মাত্র ৪২টি প্রতিষ্ঠানকে পে-প্রোটেকশন সুবিধা দেওয়া হয়েছে, আরও ৫টি প্রক্রিয়াধীন। তবে বাকিরা বঞ্চিত রয়ে গেছেন।

বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই শিক্ষক বদলির সুযোগ থাকলেও আত্তীকরণ বিধিমালার ১৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী জাতীয়করণকৃত শিক্ষকরা এই অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে শিক্ষক সমাজে চরম ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

সহকারী শিক্ষক (টেকনিক্যাল) পদটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত না থাকায় ভবিষ্যতে কারিগরি শিক্ষার প্রসার বাধাগ্রস্ত হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।

শিক্ষকরা বলেন, গত বছরের ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও আমরা এখনো পুরনো বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। এই বৈষম্য দূর করে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।

তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে ছয় দফা দাবির বাস্তবায়নের আহ্বান জানান এবং সরকারের কাছে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানান।