বেরোবির দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২ নভেম্বর) দুই শিক্ষার্থী পৃথকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস ও ছাত্র-পরামর্শ দপ্তরে তাদের লিখিত অভিযোগ জমা দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও যৌন-নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের সদস্য সচিব ড. ইলিয়াছ প্রামানিক।

অভিযুক্ত দুই শিক্ষক হলেন- ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর মো. শামীম হোসেন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাকিবুল ইসলাম। মো. শামীম হোসেনের বিরুদ্ধে এক ছাত্রী ৩১ পৃষ্ঠার স্বহস্তে লেখা অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে, ড. শাকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন আরেক ছাত্রী।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় প্রধানের কাছে শামীম হোসেনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন। সেখানে তারা ক্লাস, পরীক্ষা ও অন্যান্য কার্যক্রম থেকে ওই শিক্ষককে বিরত রাখার দাবি জানান এবং যৌন হয়রানির অভিযোগও উত্থাপন করেন।

অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেছেন, শিক্ষক শামীম হোসেন তাকে অশোভন ইঙ্গিত দেন, কুপ্রস্তাব দেন এবং অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে স্পর্শ করেন।

অভিযোগের বিষয়ে একাধিকবার ফোন করা হলেও সহকারী অধ্যাপক মো. শামীম হোসেন কোনো কল রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহযোগী অধ্যাপক ড. শাকিবুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে কিছু জানি না। আমি এমন মানুষ নই। বিষয়টি বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানব।

ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমরা ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ৩১ জন শিক্ষার্থীর দ্বারা স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। তারা ওই শিক্ষকের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা জরুরি মিটিং করেছি, যেখানে কয়েকজন নারী শিক্ষার্থী গুরুতর অভিযোগের কথা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আবারও মিটিং করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. এমদাদুল হক বলেন, আমাদের বিভাগেও একটি যৌন হয়রানির অভিযোগ এসেছে। আমাদের একজন ছাত্রী অভিযোগটি করেছেন। এ বিষয়ে আজ দুপুর ১২টায় মিটিং অনুষ্ঠিত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমান বলেন, যে অভিযোগগুলো এসেছে, সেগুলো নিয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

যৌন-নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের সদস্য সচিব ড. ইলিয়াছ প্রামানিক বলেন, একটি অভিযোগপত্র আমরা পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত যৌন-নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।