হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরতেই আরেক দুঃসংবাদ পেলেন বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খান। পরিবারের ১৫ হাজার কোটি রুপির সম্পত্তি সরকারের অধীনে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। খবর দ্য হিন্দুস্তান টাইমস, আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন’র।
জানা গেছে, মধ্যপ্রদেশ সরকার শিগগিরই ‘শত্রু সম্পত্তি আইন’-এর অধীনে অভিনেতার পারিবারিক সম্পত্তির দখল নিতে পারে। অর্থাৎ, স্থায়ীভাবে পাকিস্তান ও চীনে চলে যাওয়া ভারতীয়দের সম্পত্তিতে তাদের বংশধরদের আর কোনও অধিকার থাকবে না। সরকার সেই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে বিক্রিও করতে পারবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সাল থেকে এই সম্পত্তির উপর দখল নেয়ার সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল ভোপাল হাইকোর্ট। ২০২৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট সাইফের আবেদন খারিজ করে দিয়ে স্থগিতাদেশ তুলে নিয়েছে। এর ফলে মধ্যপ্রদেশ সরকারের আর কোনও বাধা থাকছে না।
ভোপালের কোহেফিজা থেকে চিকলোড় পর্যন্ত বিস্তৃত সাইফের সম্পত্তি। যেটির আনুমানিক বাজার মূল্য ১৫ হাজার কোটি টাকা। ভোপালের শেষ নবাব ছিলেন হামিদুল্লাহ খান। সাইফ তারই প্রপৌত্র।
শত্রু সম্পত্তি আইনের ভিত্তিতে অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর, সাইফ আলী খানদের পৈতৃক সম্পত্তি (মধ্যপ্রদেশে আছে, বেশিরভাগটা আছে ভোপালে) সরকারের হাতে চলে যেতে পারে। ১৯৬৮ সালের শত্রু সম্পত্তি আইন অনুযায়ী, দেশভাগের পরে যাঁরা পাকিস্তান চলে গিয়েছেন, তাঁদের সম্পত্তি নিজেদের হাতে নিয়ে নিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার।
ইতিহাস অনুযায়ী, ভোপালের শেষ নবাব হামিদুল্লাহ খানের তিন মেয়ে ছিলেন। বড় মেয়ে আবিদা সুলতান ১৯৫০ সালে পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন। মেজো মেয়ে সাজিদা সুলতান সাজিদা সুলতান থেকে গিয়েছিলেন ভারতেই। বিয়ে করেছিলেন নবাব ইফতিকার আলী খান পতৌদিকে। হয়ে উঠেছিলেন আইনি উত্তরাধিকারী। সেই সাজিদার নাতি হলেন সাইফ।
উত্তরাধিকার সূত্রে, সাইফের নামেও সম্পত্তি থাকার কথা আছে। ২০১৯ সালে সাজিদাকে পতৌদি পরিবারের উত্তরাধিকারী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল আদালত। কিন্তু আবিদা যে পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন, সেটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে তুলে ধরা হয়েছিল। ফলে একটা সংঘাত ও বিতর্কের জায়গা থেকেই গিয়েছে।
এরইমধ্যে হাইকোর্ট জানিয়েছে, ২০১৭ সালের সংশোধিত শত্রু সম্পত্তি আইনের আওতায় একটি বিধিবদ্ধ প্রতিকার আছে। আর সংশ্লিষ্ট পক্ষকে ৩০ দিনের মধ্যে নিজেদের মতামত পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি বিবেক আগরওয়াল জানান, হাইকোর্টের নির্দেশের ৩০ দিনের মধ্যে যদি (কোনও পক্ষ) নিজেদের মতামত দাখিল করেন, তাহলে যোগ্যতার ভিত্তিতে আবেদন বিচার করতে হবে।
এদিকে, ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার ৫ দিন পর মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বাড়ি ফিরেছেন সাইফ।