'সিনেমার প্রতি ভালোবাসা'- এই মূল স্লোগানকে সামনে রেখে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠল পঞ্চম রেড সি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সৌদি আরবের ঐতিহাসিক শহর আল বালাদে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। দশ দিনব্যাপী এই উৎসব চলবে আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
প্রথম দিনেই রেড সি-এর লাল গালিচায় সমবেত হন হলিউড, বলিউড এবং মধ্যপ্রাচ্যের একঝাঁক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন তারকা, পরিচালক ও শিল্পী। এটি মধ্যপ্রাচ্যের চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিলনমেলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
রেড কার্পেটে উপস্থিত তারকারা
উদ্বোধনী রাতে রেড কার্পেটে উপস্থিত ছিলেন অস্কারজয়ী অভিনেতা অ্যাড্রিয়ান ব্রডি; মার্কিন অভিনেত্রী কুইন লাটিফা, কির্সটেন ডানস্ট, জেসিকা আলবা ও উমা থারম্যান; কিউবান–স্প্যানিশ তারকা আনা ডি আর্মাস; ব্রিটিশ অভিনেতা ড্যানিয়েল কালুয়া; এবং ব্রিটিশ সঙ্গীতশিল্পী রিতা ওরা। বলিউড তারকা ঐশ্বরিয়া রাই। মধ্যপ্রাচ্য থেকে সৌদি তারকা সারাহ তাইবাহ উপস্থিত ছিলেন, সঙ্গে ছিলেন জেইনা মাকি, হানা মানসুর ও আরও অনেকে।
অস্কারজয়ী ব্রডি বলেন, ‘এটি আমার দ্বিতীয়বার রেড সি ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ। আমি গর্বিত সৌদি আরবের এই প্রচেষ্টার জন্য যা শুধু চলচ্চিত্র বা শিল্পেই নয়, বরং তাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে সমর্থন করছে। এই উৎসব বিশেষভাবে কম প্রতিনিধিত্বপ্রাপ্ত নারী চলচ্চিত্রকারদের জন্য দৃশ্যমানতা বাড়াচ্ছে, এবং তরুণ ও অনুপ্রেরণাদায়ক নির্মাতারা সুযোগ পাচ্ছেন।’
আন্তর্জাতিক অতিথি ও বিশেষ সম্মাননা
ব্রিটিশ অভিনেতা মাইকেল কেইনও উপস্থিত ছিলেন, যিনি চলচ্চিত্র শিল্পে তার অবদানের জন্য বিশেষ সম্মাননা পাবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জুরি সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ছিলেন শন বেকার, লেবানিজ পরিচালক নাদিন লাবাকি, ব্রিটিশ অস্কারজয়ী রিজ আহমেদ, অভিনেত্রী অলগা কুরি্লেঙ্কো এবং নাওমি হারিস।
থিম ও লক্ষ্য
এবার ফেস্টিভ্যালের মূল থিম হচ্ছে ‘সিনেমার প্রতি ভালোবাসা (For the Love of Cinema)’। আয়োজকরা জানিয়েছেন এবার ১০০টিরও বেশি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। শিল্প কার্যক্রম, নারী চলচ্চিত্রকারদের উপর বিশেষ ফোকাস এবং বৈশ্বিক সহযোগিতার বিষয়টি এবার আরও গুরুত্ব পাবে।
উদ্বোধনী ছবি ‘জায়ান্ট’
উদ্বোধনী রাতে প্রদর্শিত হলো ব্রিটিশ-ইয়েমেনি বক্সার প্রিন্স নাসিম হামেদের জীবনীভিত্তিক ছবি ‘জায়ান্ট’, যার পরিচালক রোয়ান আথাল। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আমির এল মাসরি।এল মাসরি বলেন, ‘এই ছবি আমাদের কঠোর পরিশ্রমের ফল। এটি পূর্ব ও পশ্চিম উভয় সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করছে। শেফিল্ডে বড় হওয়া একজন ইয়েমেনি মুসলিম বক্সারের জীবন সংগ্রাম ও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া সত্যিই অনুপ্রেরণামূলক।’
বৈচিত্র্যময় প্রদর্শনী
১০ দিনের উৎসবের সময় দর্শকরা ৭০টিরও বেশি দেশ থেকে ১০০টির বেশি চলচ্চিত্র উপভোগ করতে পারবেন। এখানে থাকছে বৈশ্বিক প্রিমিয়ার, আঞ্চলিক ডেবিউ এবং আন্তর্জাতিক শিরোনাম-ফিচার, ডকুমেন্টারি, অ্যানিমেশন এবং শর্ট ফিল্ম।আরব স্পেকট্যাকুলার প্রোগ্রাম-এ থাকবে আনেমারি জাসির ‘প্যালেস্টাইন ৩৬’,হাইফা আল মানসুরের ‘আনআইডেন্টিফায়েড’ এবং আনাস বে-থাফের এ ম্যাটার অফ লাইফ অ্যান্ড ডেথ।