‘জীবনসঙ্গী হতে হবে ফেমিনিস্ট’, স্পষ্ট জানালেন বাঁধন

অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বরাবরই খোলামেলা কথা বলেন। একমাত্র কন্যাসন্তানের মা বাঁধন দীর্ঘদিন ধরেই ‘সিঙ্গেল মাদার’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অতীতে একবার বৈবাহিক সম্পর্কে জড়ালেও সেই সম্পর্ক বেশিদিন টেকেনি।

২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী মাশরুর হোসেন সিদ্দিকীর সঙ্গে বাঁধনের বিয়ে হয়। কিন্তু মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে একাই সন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন অভিনেত্রী।

সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বাঁধন জানান, তার মেয়ে সায়রা এখন অনেকটাই বড় হয়েছে এবং মায়ের একাকী সংগ্রামের গল্প সে নিজেই চোখে দেখছে। মায়ের প্রতিটি কাজের পেছনে থাকা কষ্ট বুঝতে পেরে এখন সে চায়, মায়ের জীবনে একজন যোগ্য জীবনসঙ্গী আসুক।অভিনেত্রী বাঁধন ও তার মেয়ে সায়রা

বাঁধন বলেন, 'মেয়ে দেখছে, মাকে একাই সবকিছু করতে হয়, সংগ্রাম করতে হয়। ওর ধারণা, একজন সঙ্গী থাকলে হয়তো মায়ের জীবনটা কিছুটা হলেও সহজ হতো।'

নিজের পছন্দের জীবনসঙ্গী কেমন হবেন- এ নিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছেন ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ খ্যাত এই অভিনেত্রী। তিনি বলেন, 'আমার জীবনসঙ্গীকে অবশ্যই একজন ফেমিনিস্ট হতে হবে। আমি এমন কাউকে চাই না যে আমাকে রক্ষা করবে। আমাকে রক্ষার প্রয়োজন নেই, আমি আমার মতো করেই পথ চলতে জানি। আমি চাই একজন সমমর্যাদার সহযাত্রী, যে আমার চিন্তাভাবনাকে বুঝবে।'

তিনি আরও বলেন, 'এই বয়সে এসে কাউকে ফেমিনিজম শেখানোর সময় নেই। আমি কেনো একজন ফেমিনিস্ট বা আমার জীবনদর্শন কী- এগুলো ব্যাখ্যা করার দরকার নেই। আমার সঙ্গীকে এসব বুঝে নিতে হবে, মিল রাখতে হবে আমার চিন্তাধারার সঙ্গে।'

নিজের অতীত জীবনকে ঘিরে কিছুটা আক্ষেপও প্রকাশ করেন বাঁধন। তার ভাষায়, 'বিয়ে হোক বা সম্পর্ক-কখনো একজন প্রকৃত সঙ্গী পাইনি। হয়তো দানব পেয়েছি, নয়তো এমন কেউ, যে আমাকে অবহেলা করেছে, অত্যাচার করেছে। তাই জীবনে এখন মনে হচ্ছে, একজন প্রকৃত সঙ্গী থাকা দরকার।'

৪০ বছর পার করা বাঁধনের ভাষায়, এখন তার জীবনে এক নতুন পর্ব চলছে। তিনি বলেন, 'একজন মানুষ সঙ্গী ছাড়া থাকতে পারে না। আমার তো প্রায় পুরো জীবনটাই সঙ্গীহীন কেটেছে। এখন মনে হচ্ছে- পাশে কেউ থাকলে ক্ষতি কী?'

বাঁধনের পরিবার থেকেও তার জন্য উপযুক্ত জীবনসঙ্গী খোঁজার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে। তবে বাঁধনের নিজস্ব মানদণ্ড খুবই স্পষ্ট- চাই ফেমিনিস্ট, সমমর্যাদার সহযাত্রী। শুধু বৈবাহিক সম্পর্ক নয়, পারস্পরিক বোঝাপড়ার জায়গাটাই তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন তার আত্মসম্মান, একক সংগ্রাম এবং নারী স্বাধীনতার প্রতিচ্ছবি হয়েই আজও অনেক নারীর জন্য অনুপ্রেরণা। এবার হয়তো সামনে এগোনোর এই যাত্রায় তিনি খুঁজছেন একজন ‘সমান কাঁধে হাঁটতে পারা মানুষকে’।