একুশে পদকপ্রাপ্ত শাস্ত্রীয় সংগীতের পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী আর নেই। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে আটটায় রাজশাহী মহানগরীর রানীবাজার এলাকায় নিজ বাসভবন মোহিনী গার্ডেন শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর।
অমরেশ রায় চৌধুরীর ছেলে অমিত রায় চৌধুরী জানান, তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় গত ১৪-১৫ দিন ধরে ভুগছিলেন। ৮-১০ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে তাকে বাড়িতে আনা হয়। গত পরশুদিন থেকে শরীরটা খারাপ হতে থাকে। সকাল সাড়ে আটটায় নিজ বাসভবনেই তিনি দেহত্যাগ করেন।
অমরেশ রায় চৌধুরী ফরিদপুর জেলার চৌদ্দরশি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে ১৯২৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রাবস্থায় তার মা রাজলক্ষ্মী রায় চৌধুরীর একান্ত আগ্রহে প্রথম হাতেখড়ি হয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গসংগীত কলাকার ও সুরকার ফরিদপুরের সুধীর লাল চক্রবর্তীর কাছে। তার আকস্মিক মৃত্যুর পরে সিরাজগঞ্জের উচ্চাঙ্গসংগীতবিদ হরিহর শুক্লার নিকট কয়েক বছর তালিম গ্রহণের পরে তিনি সুদীর্ঘ সময় উপমহাদেশীয় মার্গ সংগীতের স্বনামধন্য সংগীত সাধক গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার সংগীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তীর কাছে ধ্রুপদ, খেয়াল ও ঠুমরীতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
পাশাপাশি ময়মনসিংহ জেলার নেত্রকোনার বিশিষ্ট শিল্পী ও সুরকার নিখিলচন্দ্র সেনের কাছে আধুনিক গান, অতুলপ্রসাদ, রাগপ্রধান, নজরুলসংগীত ও শ্যামাসংগীত শিক্ষা গ্রহণ করেন অমরেশ রায় চৌধুরী। এছাড়া সংগীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তীর সুযোগ্যপুত্র প্রখ্যাত সংগীত কলাকার মানস চক্রবর্তীর কাছেও বেশ কয়েক বছর উচ্চাঙ্গসংগীতের তালিম নেন।
অমরেশ রায় চৌধুরী ১৯৪৫ সালে বাইশরশি শিবসুন্দরী একাডেমি থেকে ম্যাট্রিক পাশ করার পর লেখাপড়ায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সাথে সাথে একান্ত নিষ্ঠার সঙ্গে উচ্চাঙ্গসংগীত শিক্ষা ও চর্চা অব্যাহত রাখেন। শৈশব থেকেই তার রাগসংগীতের প্রতি গভীর অনুরাগ দেখা যায়।
অমরেশ রায় চৌধুরী ১৯৬১ সাল থেকে রাজশাহী মহানগরীর রানীবাজার এলাকায় মোহিনী নিকেতন বাসভবনে বসবাস করতেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী ছিলেন।