বলিউডের অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন সম্প্রতি মুম্বাইয়ের গোরেগাঁও এলাকায় তার দুটি লাক্জারি ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন। এই বিক্রয়কে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকেই ভাবছেন, তিনি কি আর্থিক সংকটে পড়েছেন? তবে বাস্তব চিত্রটি একেবারেই ভিন্ন।
চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর ও ১ নভেম্বরে অমিতাভ বচ্চন ওবেরয় এক্সকুইসিট বিল্ডিংয়ের ৪৭তম তলায় অবস্থিত দুটি ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন। প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন ১ হাজার ৮২০ বর্গফুট এবং দুটি ফ্ল্যাট মিলে মোট বিক্রয়মূল্য ছিল ১২ কোটি টাকা। ফ্ল্যাট দুটির মালিকানা গেছেন যথাক্রমে আশা ঈশ্বর শুক্লা ও মমতা সুরজদেব শুক্লার নামে।
প্রথম নজরে মনে হতে পারে, বড় কোনো আর্থিক চাপে হয়তো ফ্ল্যাট দুটি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন অমিতাভ। কিন্তু হিসাব করে দেখা গেছে, এটি মোটেও সংকটের চিহ্ন নয়, বরং একটি লাভজনক বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত।
২০১২ সালে তিনি এই ফ্ল্যাট দুটি কিনেছিলেন মাত্র ৮.১২ কোটি টাকায়। ১৩ বছর পরে সেগুলো ১২ কোটিতে বিক্রি করে তার লাভ হয়েছে প্রায় ৩.৮৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ, তার বিনিয়োগে মোট রিটার্ন এসেছে ৪৭ শতাংশ।
এটি অমিতাভ বচ্চনের সম্পত্তি বিক্রির প্রথম ঘটনা নয়। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতেই তিনি মুম্বাইয়ের অন্ধেরীর একটি ডুপ্লেক্স অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি করেছিলেন ৮৩ কোটি টাকায়, যেটি তিনি কিনেছিলেন ৩১ কোটি টাকায়। মাত্র চার বছরে এই বিক্রয়ে তার লাভ হয়েছিল প্রায় ১৬৮ শতাংশ।
তিনি শুধু বিক্রিই করছেন না, একই সঙ্গে নতুন জায়গাতেও বিনিয়োগ করছেন। ২০২৪ সালে তিনি ও তার ছেলে অভিষেক বচ্চন মুম্বাইয়ের মুলুন্দে ১০টি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন। এছাড়া, আলিবাগ ও অযোধ্যাতেও তিনি জমি ও প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, অমিতাভ বচ্চন একজন স্মার্ট বিনিয়োগকারী হিসেবে তার সম্পদের পোর্টফোলিও পুনর্বিন্যাস করছেন। মুম্বাইয়ের রিয়েল এস্টেটের দাম যখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে, তখন তিনি পুরনো বিনিয়োগগুলো বিক্রি করে দিচ্ছেন। সেই টাকা দিয়ে তিনি তুলনামূলক কম দামের জায়গায়, যেমন আলিবাগ বা অযোধ্যায় নতুন বিনিয়োগ করছেন। এটি ব্যবসায়িক জগতে একটি প্রচলিত ও সুচতুর কৌশল মাত্র।
সুতরাং, দুটি ফ্ল্যাট বিক্রির ঘটনাটি অমিতাভ বচ্চনের আর্থিক দুরবস্থার ইঙ্গিত নয়। বরং, ৮২ বছর বয়সেও তিনি কীভাবে একজন দূরদর্শী ও কৌশলী বিনিয়োগকারী হিসেবে তার বিশাল সম্পত্তি সঠিকভাবে পরিচালনা করছেন, এই ঘটনা তারই স্বাক্ষর বহন করছে।