আজ (রোববার) রাত ১০টার মধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে বজ্রসহ হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। একইসঙ্গে তিনি বঙ্গোপসাগরে মে মাসের শেষ সপ্তাহে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছেন, যার সম্ভাব্য নাম হতে পারে ‘শক্তি’।
রোববার (১১ মে) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, বিকেল সাড়ে ৫টার পর থেকে রাত ১০টার মধ্যে ঢাকার আকাশে বজ্রপাতসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। এই বৃষ্টিপাত হবে মূলত হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার। বিশেষ করে ঢাকা শহরের পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ অংশের উপজেলাগুলোর ওপর দিয়ে এই আবহাওয়া পরিস্থিতি প্রবলভাবে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, একই সময়ে গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, নারসিংদী, কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি এবং রাঙ্গামাটিতেও একই ধরনের বৃষ্টিপাত হতে পারে। হঠাৎ বজ্রঝড় ও দমকা হাওয়ার কারণে এসব অঞ্চলে জনসাধারণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
মোস্তফা কামাল পলাশ তার স্ট্যাটাসে আরও উল্লেখ করেন, বঙ্গোপসাগরের সাম্প্রতিক আবহাওয়াগত গতিপ্রকৃতি পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, মে মাসের ২৩ থেকে ২৮ তারিখের মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে ‘শক্তি’—যা শ্রীলংকার প্রস্তাবিত নাম।
তিনি সতর্ক করে বলেন, এই ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের ওড়িশা উপকূল থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম উপকূলের মধ্যবর্তী যে কোনো স্থানে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে বেশি।
বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে যে ধরনের সমুদ্রতলীয় নিম্নচাপ এবং তাপমাত্রাগত পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে, তা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন এই গবেষক। যদিও এখনো ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ সৃষ্টি হয়নি, তবে পরিস্থিতি যেদিকে অগ্রসর হচ্ছে, তাতে করে তা কেবল সময়ের ব্যাপার বলেই মনে করছেন তিনি।
ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়নি। তবে আবহাওয়াবিদ পলাশ জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতিকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রেখেছি। সময়মতো প্রাসঙ্গিক কর্তৃপক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, আগাম সতর্কতা অবলম্বন করলে ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। তাই উপকূলীয় অঞ্চলসহ সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির এখনই সময়।
সতর্ক থাকতে যা করতে হবে
- ঘূর্ণিঝড়সংক্রান্ত সরকারি পূর্বাভাস নিয়মিত অনুসরণ করুন
- ঝড়ের সময় বিদ্যুৎ ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি থেকে দূরে থাকুন
- নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা আগেভাগেই নিশ্চিত করুন
- মাছ ধরার নৌকা বা ট্রলার নিয়ে সমুদ্রে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন
এছাড়া বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা বিবেচনায় রেখে নগরবাসীকে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন আবহাওয়া গবেষক।