ধূমপানে দেশে ক্ষতির শিকার আট কোটি মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক সেবন করে। প্রায় ৮ কোটি মানুষ পরোক্ষভাবে ধূমপানের ক্ষতির শিকার হয়। তবে অসংক্রামক রোগ এবং অকাল মৃত্যু প্রতিরোধে এবং স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন নিশ্চিতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনী ও বাস্তবায়ন অপরিহার্য। 

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা মানস’র আয়োজনে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োগ ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

অতিথি হিসেবে সভায় আলোচনা করেন ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের পরামর্শক মো. ফাহিমুল ইসলাম, ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী। মানস’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. অরূপ রতন চৌধুরী সভায় সভাপতিত্ব ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, দেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক সেবন করে। প্রায় ৮ কোটি মানুষ পরোক্ষভাবে ধূমপানের ক্ষতির শিকার হয়। ক্যান্সার, স্ট্রোক, হৃদরোগ, ডায়বেটিসসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের অন্যতম কারণ হলো তামাক সেবন। যা স্বাস্থ্য খাতে চাপ বৃদ্ধি করছে। তামাকের কারণে পরিবেশ-জীববৈচিত্র, কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন হুমকিতে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রবন্ধে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে 'ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান' রাখার বিধান বিলুপ্ত, ই- সিগারেট, ভেপ ইত্যাদি আমদানি, বিপণন, ব্যবহার নিষিদ্ধ করাসহ আরও বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য সংশোধনী প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।

ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, দেশে মাদকের সহজলভ্যতার পিছনে ধূমপান ও তামাকের ব্যবহার অন্যতম বড় কারণ। সুতরাং তামাক নিয়ন্ত্রণে আইন শক্তিশালী ও বাস্তবায়ন, ট্যাক্স বৃদ্ধি, সিএসআর নিষিদ্ধসহ বহুমাত্রিক পদক্ষেপ নিতে হবে। তামাকবিরোধী কাজে সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন। গণমাধ্যমের কাজ হলো সত্য তুলে ধরা। তামাক ও ধূমপানের প্রকৃত সত্য গণমাধ্যমে তুলে ধরে মানুষকে সচেতন করতে হবে। এতে তারা প্রভাবিত হবে এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

শ্যামল দত্ত বলেন, উন্নত দেশগুলোতে তামাক ক্রমান্বয়ে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে তামাকের ব্যবসা বাড়ানো হচ্ছে। দেশের অনেক আইন প্রণেতা তামাক ব্যবসার সাথে জড়িত এবং তাদের লবিং রয়েছে। ফলে তামাক নিয়ন্ত্রণ কাঙ্খিত মাত্রায় হচ্ছে না। তামাক নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন।