সুখের সংকটে ভুগছে তরুণরা: গবেষণা

বিশ্বজুড়ে তরুণদের মাঝে সুখ কমে যাচ্ছে ‘১২ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের জীবন নিয়ে ‘অসুখী’ মনোভাব সবচেয়ে বেশি। তরুণ বয়সে মানুষ সবচেয়ে সুখী থাকে! মধ্য বয়সে কিছুটা কমে; শেষ বয়সে আবার বাড়ে— জীবনের ‘আত্মতৃপ্তি’ নিয়ে বেশির ভাগ মানুষের বিশ্বাস এমনই। এবার এই বিশ্বাসে হয়ত ইতি টানতে হবে বলছে গবেষকরা।

গবেষণায় দেখা গেছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ‘সুখ’ বাড়ে এবং তরুণ বয়সে সেটা চূড়ায় থাকে না।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়, এই গবেষণায় জাতিসংঘ পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ (এনবিইআর)।

গবেষণার জরিপে দেখা গেছে, ১৮-২৪ বছর বয়সী তরুণরা আগের তুলনায় অনেক বেশি হতাশ, উদ্বিগ্ন ও একাকীত্বে ভুগছে। ইংরেজি ভাষাভাষী ছয়টি দেশের ওপর এ গবেষণা চালানো হয়, যেখানে দেখা যায় তরুণ প্রজন্মের সুখের ‘সূচক’ তাদের আগের প্রজন্মের চেয়ে কম। তরুণদের মানসিক সুস্থতা নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগের ইঙ্গিত মিলেছে।

গবেষকরা বলছেন, জীবন নিয়ে তরুণদের ‘আত্মতৃপ্তির’ পরিমাণ গত এক দশকে কমার অন্যতম একটা কারণ হলো স্মার্ট ফোন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, আয়ারল্যান্ড, নিউ জিল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি জরিপের ফল বিশ্লেষণ করেন গবেষকরা।

গবেষণা বলছে, কোভিড মহামারীর প্রভাবে তরুণদের মধ্যে হতাশা বেড়ে যায়। ডিজিটাল প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এ ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে ‘সুখ’ কমে যাওয়ার স্পষ্ট সম্পর্ক দেখতে পেয়েছেন।

আল জাজিরাকে সহ-গবেষক ডেভিড জি ব্ল্যাঞ্চফ্লাউয়ার বলেন, ইন্টারনেটই প্রধান অনুঘটক। এর বাইরে আর কিছু দিয়েই হিসাব মেলে না।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক গবেষণায় দেখা যায়, ৭৫ শতাংশ আমেরিকান তরুণ স্মার্টফোন ছাড়া বেশি ‘সুখ অনুভব’ করেন।

একই বছর আরেকটি গবেষণা দাবি করে, ইউরোপে ব্রিটিশ তরুণদের মধ্যে জীবন নিয়ে আত্মতৃপ্তি সবচেয়ে কম। এর কারণ হিসেবে গবেষণা প্রতিবেদনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাবকে সামনে আনা হয়।

ব্ল্যাঞ্চফ্লাউয়ার বলেন, তিনি আফ্রিকার দেশগুলোর তরুণদের ওপর একই ধরনের একটি গবেষণায় সম্পৃক্ত ছিলেন। ‘আফ্রিকার তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য’ শিরোনামে গবেষণাটি হয়।

সেখানেও দেখা যায়, যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, তাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সমস্যা অন্যদের চেয়ে বেশি।