শ্বেতীরোগ বা ভিটিলিগো হলে ত্বকে সাদা দাগ বা প্যাচ দেখা দেয়। এটি কোনো সংক্রামক রোগ নয়, তবে এ নিয়ে সমাজে নানা কুসংস্কার প্রচলিত আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগটির স্থায়ী চিকিৎসা না থাকলেও সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
চিকিৎসকদের মতে, শ্বেতী দুই ধরনের হয়ে থাকে- সেগমেন্টাল ও নন-সেগমেন্টাল। এর মধ্যে নন-সেগমেন্টাল বেশি দেখা যায়, যা মোট রোগীর প্রায় ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে পাওয়া যায়। এই ধরনের শ্বেতীতে প্যাচ বা সাদা দাগ সাধারণত শরীরের দুই পাশে সমানভাবে দেখা যায়। সূর্যের সংস্পর্শে আসা অংশ যেমন মুখ, ঘাড় ও হাত এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। অন্যদিকে সেগমেন্টাল তুলনামূলক দ্রুত ছড়ায় এবং সাধারণত কম বয়সীদের মধ্যে হয়ে থাকে।
রোগের কারণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলেন, শ্বেতী মূলত জেনেটিক বা বংশগত কারণে হয়ে থাকে। এটি একটি অটোইমিউন রোগ। সানবার্ন বা অতিরিক্ত সূর্যের তাপ, এমনকি কিছু শিল্প রাসায়নিক মেলানিন উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে। গাঢ় ত্বকের মানুষের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি।
শরীরের সাদা বা হালকা ধূসর প্যাচ, চুল সাদা বা ধূসর হয়ে যাওয়া, বিশেষ করে হাত, মুখ, ঠোঁট ও নাকে এ রোগের সাধারণ লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শ্বেতীরোগ স্থায়ীভাবে নিরাময় সম্ভব নয়। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা শুরু করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। মুখ, বুক, বাহু ও পায়ের মতো অংশ দ্রুত পুনরুদ্ধার হতে পারে। তবে হাত, কবজি, পা ও নিতম্বে চিকিৎসার ফল তুলনামূলক ধীরগতি।
বর্তমানে শ্বেতীরোগের ছয় ধরনের চিকিৎসা প্রচলিত রয়েছে। এগুলো হলো- এপিডার্মাল সেলুলার ড্রাফটিং, স্টেরয়েড ক্রিম, ইউভি থেরাপি, এক্সাইমার লেজার, ডিপিগমেন্টেশন এবং ছোট ট্যাটু করা। চিকিৎসকরা মনে করেন, রোগীদের মানসিক শক্তি ও নিয়মিত চিকিৎসা অনুসরণ করাই শ্বেতী নিয়ন্ত্রণের বড় উপায়।