অপরিণত শিশুর যত্নে বিশেষ সতর্কতা 

বিশ্বজুড়ে প্রিম্যাচিওর বা অপরিণত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। গর্ভধারণের ৩৬ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই জন্ম নেওয়া এসব শিশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পুরোপুরি বিকশিত না হওয়ায় বিশেষ যত্ন ও নজরদারি অপরিহার্য।

চিকিৎসকদের মতে, জন্মের পর এসব শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিক শিশুদের তুলনায় অনেক কম থাকে। বিশেষ করে ফুসফুস ও মস্তিষ্ক প্রায়ই অপরিণত থাকে। তাই জন্মের পর প্রথম দিকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (NICU) তে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়।

তবে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পরও তাদের সুস্থতা বজায় রাখতে অভিভাবকদের কয়েকটি বিষয় মেনে চলা জরুরি। একজন শিশু বিশেষজ্ঞ নিম্নলিখিত পরামর্শ দিয়েছেন-

বাড়িতে প্রিম্যাচিওর শিশুর যত্নের মূল নিয়মাবলি

হাত পরিষ্কার রাখা: শিশুকে ধরার আগে বা খাবার দেওয়ার আগে সবসময় সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। সংক্রমণের ঝুঁকি এভাবে কমানো যায়।

শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখা: অপরিণত শিশু সহজে তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারে না। তাই ঘরের তাপমাত্রা আরামদায়ক রাখুন এবং শিশুকে গরম কাপড়ে ভালোভাবে জড়িয়ে রাখুন।

সংক্রমণ এড়িয়ে চলা: অসুস্থ বা সংক্রমিত ব্যক্তিকে শিশুর কাছে আসতে দেবেন না। ভিড় বা জনসমাগমপূর্ণ স্থান এড়িয়ে চলা আবশ্যক।

সময়মতো টিকা দেওয়া: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুর সমস্ত টিকা নির্ধারিত সময়ে দিতে হবে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।

বুকের দুধ খাওয়ানো: অন্তত ৬ মাস শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত। বুকের দুধ প্রিম্যাচিওর শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সবচেয়ে কার্যকর।

নিয়মিত মালিশ: শিশুর সমস্ত অঙ্গের সঠিক বিকাশ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন গা, হাত, পা ও পিঠে হালকা মালিশ করুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।

প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট: শিশুর শরীরে দ্রুত অ্যান্টিবডি গড়ে তোলার জন্য চিকিৎসকের নির্দেশমতো প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতেও সহায়তা করে।

সকালের রোদ: প্রতিদিন কিছুক্ষণের জন্য শিশুকে নরম সকালের রোদে রাখুন। এতে ভিটামিন ডি তৈরি হয়, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে এবং সর্দি-কাশি কমায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর এই নিয়মগুলো মেনে চলা প্রিম্যাচিওর শিশুর সুস্থ বিকাশ ও সংক্রমণ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।