কানের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের সামান্য অসুবিধাও বড় ধরনের সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, কানে ব্যথা, পানি পড়া বা হঠাৎ শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া এসব উপসর্গ উপেক্ষা করলেই বাড়তে পারে গুরুতর জটিলতা। অনেক ক্ষেত্রেই এসব লক্ষণ কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
চিকিৎসা সূত্রে জানা যায়, কানের পর্দা বা টিম্পানিক ঝিল্লি বাইরের ও মধ্য কানের মাঝে অবস্থিত এক অত্যন্ত পাতলা ঝিল্লি। এটি শব্দ গ্রহণে সাহায্য করে এবং সংক্রমণ থেকে কানের অভ্যন্তরীণ অংশকে সুরক্ষা দেয়। নানা কারণে এই পর্দা ফেটে গেলে শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া থেকে শুরু করে মাথা ঘোরা পর্যন্ত নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার কারণ
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রধান তিনটি কারণে কানের পর্দা ছিঁড়ে যেতে পারে-
- সংক্রমণ: ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসজনিত সংক্রমণ কানের ভেতরে চাপ বাড়িয়ে পর্দা ফাটিয়ে দিতে পারে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় তাদের এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
- বিকট শব্দ: হঠাৎ জোরে শব্দ বা বিস্ফোরণের মতো তীব্র সাউন্ড ওয়েভ কানের ঝিল্লির ওপর চাপ সৃষ্টি করে সেটি ছিঁড়ে দিতে পারে।
- আঘাত: ইয়ারবাড, দেশলাই কাঠি বা অন্য যেকোনো বস্তু দিয়ে কান পরিষ্কার করতে গিয়ে আঘাত লাগলে কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে। দুর্ঘটনাজনিত আঘাতেও একই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কানের পর্দা ফেটে গেলে সাধারণত তীব্র ব্যথা, কানে পানি পড়া, শব্দ শুনতে সমস্যা, কান গরম বা ভারী লাগা এবং মাথা ঘোরার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
চিকিৎসকরা জানান, কানের পর্দা ফেটে গেলে বাড়িতে গরম পানি দিয়ে হালকা সেঁক দিলে সাময়িক আরাম মিলতে পারে। তবে ব্যথা বাড়লে বা কান থেকে পানি ঝরলে দেরি না করে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। বর্তমানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কানের পর্দা পুনর্গঠনের জন্য টিম্পানোপ্লাস্টি করা হচ্ছে, যা রোগীদের আবার স্বাভাবিক শ্রবণ সক্ষমতা ফিরে পেতে সাহায্য করে।
চিকিৎসকদের পরামর্শ, কানে কোনো সমস্যাকে হালকাভাবে না নিয়ে দ্রুত চিকিৎসা নিলে বড় জটিলতা এড়ানো সম্ভব।