শীতের শুরুতেই বাজারে গুড়ের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। চা, নাড়ু, পিঠা কিংবা রান্নাবান্নায় ব্যবহারের পাশাপাশি গুড় শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং নানা স্বাস্থ্য উপকারও প্রদান করে। তবে এই চাহিদাকে কেন্দ্র করে বাজারে বেড়েছে নকল বা ভেজাল গুড়ের পরিমাণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাঁটি গুড় বেছে নিতে না পারলে তা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
গুড়ের মূল উপকরণ হওয়া উচিত খেজুর রস। কিন্তু বর্তমানে অনেক উৎপাদক চিনি, কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক মিশিয়ে গুড় তৈরি করছেন। তাই বাজারে কেনার আগে আসল-নকল শনাক্ত করা জরুরি।
রং দেখে ধরুন আসল-নকল
আসল গুড় সাধারণত গাঢ় বাদামি বা হালকা সোনালি রঙের হয়ে থাকে। এতে প্রাকৃতিকভাবেই একটি রুক্ষ ও কম মসৃণ টেক্সচার থাকে। অন্যদিকে নকল গুড় দেখতে অতিরিক্ত মসৃণ, চকচকে এবং রং অনেক সময় অস্বাভাবিক উজ্জ্বল হয় যা কৃত্রিম রং ব্যবহারের ইঙ্গিত দেয়।
জলে মিশিয়ে পরীক্ষায় ধরা পড়ে ভেজাল
হালকা গরম পানিতে গুড়ের একটি ছোট টুকরো ফেলে সহজেই পরীক্ষা করা যায়। আসল গুড় ধীরে ধীরে দ্রবীভূত হয় এবং পানি হালকা বাদামি রঙ ধারণ করে। কিন্তু যদি পানি স্বচ্ছ থাকে অথবা নিচে সাদা স্তর দেখা দেয়, তবে তা নকল বা রাসায়নিক মেশানো গুড় বলেই ধরে নিতে হবে।
তাপে গলানোর সময় আচরণ
গুড় চামচে নিয়ে হালকা আঁচে ধরলে আসল গুড় কোনো তীব্র গন্ধ বা ধোঁয়া ছাড়াই গলে যায়। বিপরীতে নকল গুড় থেকে কালো ধোঁয়া ও তীব্র রাসায়নিক গন্ধ বের হয়।
গঠন ও স্পর্শে পার্থক্য
আসল গুড় স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা আঠালো এবং বাইরের অংশ খানিকটা রুক্ষ হয়, কারণ এতে প্রাকৃতিক আর্দ্রতা থাকে। নকল গুড় সাধারণত খুব শক্ত, চকচকে ও মসৃণ হয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত খাঁটি গুড় খেলে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি পায়, রক্ত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং হজমেও উপকার করে। তাই শীতের মৌসুমে গুড় কেনার সময় এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল।