বাড়ির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যবহারযোগ্য ঘর হলো রান্নাঘর। পরিবারের স্বাস্থ্য বিশেষ করে খাবারের নিরাপত্তা এই রান্নাঘরের পরিচ্ছন্নতার উপরই নির্ভর করে। অথচ আমরা অনেকেই এমন একটি জায়গার প্রতি নিয়মিত অবহেলা করি, যেখান থেকে সবচেয়ে বেশি ব্যাকটেরিয়া ছড়াতে পারে তা হলো রান্নাঘরের সিঙ্ক।
প্রতিদিনের রান্নাবান্না, বাসন ধোয়া, শাকসবজি পরিষ্কার এবং ছিটকে পড়া জলের কারণে সিঙ্ক প্রায় সব সময়ই ভেজা এবং নোংরা থাকে। অনেকেই ব্যস্ততার কারণে সিঙ্ক ধোয়ার পর তা শুকাতে দেন না বা পরিষ্কার করেন না। এই ছোট্ট ভুলটি কিন্তু পুরো পরিবারের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
ক্লিনিং এক্সপার্ট লিন্ডসে ক্রম্বি একটি ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে রান্নাঘরের সিঙ্ক সংক্রান্ত এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সামনে এনেছেন। ভিডিওটি ইতোমধ্যেই ভাইরাল। সেখানে তিনি জানান, সিঙ্ক ভেজা অবস্থায় রাখলে তা জীবাণু, দুর্গন্ধ, ময়লা এবং বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়ার প্রজননস্থলে পরিণত হয়।
এই ব্যাকটেরিয়াগুলো ধীরে ধীরে বাসনপত্র, ফলমূল ও শাকসবজির মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। যার ফলে হতে পারে, খাদ্য বিষক্রিয়া, পেটের ব্যথা, ডায়রিয়া এবং অন্যান্য সংক্রমণ।
রান্নাঘরের সিঙ্ক পরিষ্কারের সঠিক উপায়
১) সিঙ্কে যে কোনও কাজ করেই সঙ্গে সঙ্গে তা পরিষ্কার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সিঙ্কে দীর্ঘ ক্ষণ বাসন ফেলে রাখবেন না। অনেকেই পরে মাজবেন বলে বাসন জলে ভিজিয়ে রেখে দেন। এমনটা করা উচিত নয়। খাবারের তেল জলের সঙ্গে মিশে সারা সিঙ্কে একটা তেলের আস্তরণ পড়ে যায়। তখন সিঙ্ক পরিষ্কার করতে কালঘাম ছুটে যায়।
২) সিঙ্ক শুধু পরিষ্কার করলেই হবে না, তাকে জীবাণুমুক্তও করতে হবে। একটি পাত্রে ভিনিগার নিয়ে তাতে বেশ কয়েকটি কাগজের টুকরো ডুবিয়ে রাখুন। এ বার সেই ভেজা কাগজগুলি সিঙ্কের ধার বরাবর ছড়িয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন। এই পদ্ধতিতে কেবল জীবাণু দূর হবে না, সিঙ্কের ধারে জমে থাকা জলের দাগও পরিষ্কার হবে।
৩) কেবল সিঙ্ক পরিষ্কার করলেই হবে না, পাইপও পরিষ্কার করতে হবে। এর জন্য লাগবে শুধু নুন, ভিনিগার, বেকিং সোডা এবং গরম জল। প্রথমে আধ কাপ নুন পাইপের মুখে ঢেলে দিন। তার পর গরম জলে খানিকটা সাবানের গুঁড়ো মিশিয়ে ধীরে ধীরে সেই জল ঢেলে দিন। নুনের সঙ্গে নোংরা ধুয়ে যাবে। এর পর পাইপের মুখে আধ কাপ বেকিং সোডা ছড়িয়ে দিন। মিনিট ১৫ রেখে এক কাপ ভিনিগার ঢেলে দিন। পাইপ থেকেই সিঙ্কে আরশোলা আসে। তাই নিয়মিত পাইপটি জীবাণুমক্ত করতেই হবে।
আমরা প্রতিদিন যা খাই, তার গুণগত মান যেমন জরুরি, ঠিক তেমনই জরুরি সেই খাবার তৈরি হওয়ার পরিবেশ। রান্নাঘরের সিঙ্ক যতই ছোট জায়গা হোক না কেন, এটি হতে পারে রোগ ছড়ানোর সবচেয়ে বড় মাধ্যম যদি আমরা সচেতন না হই।
তাই আজই আপনার রান্নাঘরের সিঙ্কটি একবার ভালো করে দেখে নিন। নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন এবং নিজের ও পরিবারের সুস্বাস্থ্যের দিকে আরেক ধাপ এগিয়ে যান।