বিয়ের আগে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরি

যে কোনো ব্যক্তির জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো বিয়ে। বিয়ে মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের একটি। একজন মানুষের সঙ্গে সারাজীবনের বন্ধন। তাই এ গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সারার আগে কয়েকবার ভাবা উচিত। জেনে নিন বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার আগে ঠিক কতটা অপেক্ষা করবেন ও সম্পর্কের কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন।

দায়িত্ব : বিয়ে মানে নতুন দায়িত্ব। শৈশব, স্কুলজীবন, কলেজজীবনে আমরা বাবা-মায়ের ছত্রছায়াতে থাকতেই অভ্যস্ত থাকি। অনেকে এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন না অথবা চান না বলে বিবাহিত জীবনে সমস্যা শুরু হয়। তাই বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার আগে দু'জনই ভেবে দেখুন। আলোচনা করুন যে, আপনারা নিজেদের এবং একে অপরের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত কি না।

পারিবারিক পটভূমি: ব্যক্তির পারিবারিক পটভূমি তাদের ব্যক্তিত্ব, বিশ্বাস এবং দৃষ্টিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। বিয়ের আগে একে অপরের পারিবারিক পটভূমি এবং তারা কীভাবে বিবাহকে প্রভাবিত করতে পারে তা বোঝা অপরিহার্য। যেমন, একজন যদি কঠোর, রক্ষণশীল পরিবারের বেড়ে উঠেন এবং অপরজন উদারপন্থী পরিবারে বেড়ে উঠে তবে এটি দ্বন্দ্বের কারণ হতে পারে।

শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক : যুগলের সম্পর্কে শান্তি রয়েছে নাকি প্রায়শই সংশয়  দেখা দেয়? যদি সংশয় থাকে তাহলে অবশ্যই বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার আগে ভাবুন। অনেক সময় মনে হয়, বিয়ে হলে সংশয় দূর হবে। কিন্তু বাস্তবে হয় ঠিক তার বিপরীত। এমন অবস্থায় বিয়ের ভিত কখনোই মজবুত হয় না। যদি একে অপরের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হোন তবে চোখ বুজে বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারেন।

বিয়ের ব্যাপারে আলোচনা : আপনারা কি বিয়ের ব্যাপারে আলোচনা করেন? ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেন। যদি না করে থাকেন তাহলে একে অপরকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার আগে চিন্তা করে দেখুন। সম্পর্ক নিয়ে এগিয়ে যাবার পরিকল্পনা থাকলে ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা সহজভাবেই আসবে।

অস্থির সম্পর্ক : আপনাদের সম্পর্ক কি বরাবর স্থিতিশীল ছিল? নাকি ব্রেকআপ-পুনর্মিলনের মধ্য দিয়ে গেছে? যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে কিন্তু বিয়ের পরও এ ধারা চলতে থাকবে। বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সম্পর্কে স্থিতিশীলতা সবচেয়ে জরুরি।

আগের সম্পর্ক : আপনারা দু’জনেই আগের সম্পর্ক থেকে সম্পূর্ণ বেরিয়ে এসেছেন তো? অনেক সময়ই জীবনে নতুন সম্পর্ক এলেও আমরা আগের ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারি না। বিয়ের ভিত শক্ত করতে ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। যদি এখনো আগের সম্পর্ক আপনাকে বা আপনার সঙ্গীকে নাড়া দেয় তাহলে অপেক্ষা করুন। এখনই বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার সময় আসেনি।

আর্থিক নিরাপত্তা : বিয়ের সঙ্গে যে দায়িত্বগুলো জুড়ে রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় আর্থিক দায়িত্ব। বিয়ের আগে অনেকেরই খরচের হিসাব থাকে না, আর্থিক নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা থাকে না। ফলে আর্থিক স্থিতিশীলতা তেমন ভাবে থাকে না। বিয়ের আগে নিজের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা এবং পরিকল্পনামাফিক গুছিয়ে নেয়া দরকার। তাই পরস্পরের আর্থিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করুন। কতোটা আর্থিক দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত, সে বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলুন। তারপরই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিন।

জীবনধারা: জীবনধারা একে অপরের সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। শখ, অবসর সময় এবং সামাজিকীকরণের মতো জিনিসগুলো দাম্পত্য জীবনে প্রভাব ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, যদি একজন বাইরে সময় কাটাতে পছন্দ করেন এবং অপরজন বাড়িতে থাকতে পছন্দ করেন তবে এটি পারস্পারিক দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে।