ঘরের কোনে একটু সবুজ আমাদের সকলেরই খুব প্রিয়। শহরের ফ্ল্যাটবাড়িতে বাগান বলতে যা বোঝায় তা তো আর করার সুযোগ নেই। তারপরও শখের বশে অনেকেই বাড়িতে গাছপালা বা হাউসপ্ল্যান্ট লাগিয়ে থাকেন। অল্প জায়গায়, অল্প আলোতে এসব গাছ ঘরে প্রকৃতির ছোঁয়া নিয়ে আসে। জানেন কি, হাউসপ্ল্যান্ট কেবল বাড়ির সৌন্দর্য্যই বাড়ায় না। এটি স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। চলুন, হাউসপ্ল্যান্টের স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলো জেনে নেই।
বাতাসের গুণগত মান উন্নত করেঃ গাছপালা প্রাকৃতিক বায়ুকে স্বাভাবিকভাবেই পরিশোধিত করতে পারে। বায়ু থেকে ক্ষতিকারক দূষণ দূর করে। স্পাইডার প্ল্যান্ট এবং পিস লিলি বাড়ি থেকে টক্সিন পদার্থ দূর করে। তাছাড়া যাদের শ্বাসকস্ট বা অ্যালার্জি জনিত রোগের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এই প্ল্যান্টগুলো খুবই কার্যকরী।
স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কমায় হাউসপ্ল্যান্টঃ একটি গবেষণা থেকে দেখা গেছে, হাউসপ্ল্যান্ট বা যে কোনো গাছের আশেপাশে সময় কাটালে স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কমে। সাধারণত গাছপালাগুলোতে কর্টিসেলের মাত্রা কম থাকে। ফলে স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কমে। কর্টিসেল হলো শরীরের গুরুত্বপূর্ণ হরমোনগুলোর মধ্যে একটি। এই হরমোন মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেলে বা কমে গেলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়।
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়ঃ হাউসপ্ল্যান্ট আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নত করবে। অবসাদে বা হতাশায় গাছের পরিচর্যা করুন। এটি আপনার স্মৃতিশক্তিকে তীক্ষ্ণ করে। মস্তিষ্কে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বাড়িতে গাছপালা রোপণ করলে এটি আপনার রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গাছপালা ফাইটোসাইড নির্গত করে, যা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ফলে বাড়িতে গাছপালা থাকার ফলে আপনার অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম কমে।
ঘুমের উন্নতি করেঃ আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যারা অনিদ্রাজনিত রোগে ভুগছেন। দীর্ঘদিন না ঘুমানোর ফলে স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়। উপরন্তু, গাছপালা ঘুমের অভ্যাসকে উন্নত করে। ল্যাভেন্ডার বা জেসমিন এবং এমন আরও গাছপালা অনিদ্রাজনিত রোগ কাটাতে সক্ষম। স্নেকপ্ল্যান্ট রাতে অক্সিজেন বৃদ্ধি করে এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে। অ্যালোভেরাও বাতাসকে পরিশোধিত করে সতেজ নিঃশ্বাস নিতে সাহায্য করে।
সুস্থ থাকার জন্য আপনার বাড়ির ছাদে টবে বা বারান্দায়, ঘরে যেখানে যেটুকু আলো আসে সেই অনুযায়ী কিছু গাছ অবশ্যই লাগান।