ভেষজ রাণী তুলসী পাতার নানান গুণ

তুলসী একটি ঔষধিগাছ। তুলসী অর্থ ‘যার তুলনা নেই’। তুলসী গাছ লামিয়াসি পরিবারের অন্তর্গত একটি সুগন্ধী উদ্ভিদ। এটি একটি ঘন শাখা প্রশাখা বিশিষ্ট চিরহরিৎ গাছ। এর পাতা, ফুল ও ফলের একটি ঝাঁঝালো গন্ধ আছে। তুলসী গাছ পরিবেশে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন সরবরাহ করে, এ কারণে একে ‘অক্সিজেনের ভাণ্ডার’ বলা হয়। এ ছাড়া ভেষজ রাণী হিসেবে পরিচিত তুলসী পাতা।

জেনে নেওয়া যাক তুলসী পাতার গুণ সম্পর্কে-
রোগ প্রতিরোধ: তুলসীর ইমিউনোমোডুলেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে বলে জানা যায়। যার মানে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। আপনি যদি নিয়মিত তুলসী পানি পান করেন, তাহলে আপনার ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে এবং শরীরকে সংক্রমণের জন্য আরও স্থিতিস্থাপক করতে সাহায্য করতে পারে।

হজমশক্তির উন্নতি: বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘তুলসীর কার্মিনেটিভ বৈশিষ্ট্য হজমে সাহায্য করে এবং গ্যাস ও ফোলাভাব কমাতে পারে। তুলসীর পানি পান করলে পাচনতন্ত্র প্রশমিত হয় এবং হজমে সহায়তা করে।’ এ ছাড়া তুলসী পানি পানে আপনার শরীরের বিষাক্ত পদার্থ ও জীবাণু বের করে দিতে সাহায্য করে। এটি হজমের ব্যাধিগুলোকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।

স্ট্রেস কমায়: তুলসীকে একটি অভিযোজনীয় ভেষজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যার অর্থ এটি শরীরকে চাপের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে এবং শান্ত এবং শিথিলতার অনুভূতি প্রচার করতে সহায়তা করতে পারে। তুলসী পানি পানে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্য: তুলসী ঐতিহ্যগতভাবে কাশি, সর্দি এবং হাঁপানির মতো শ্বাসকষ্ট দূর করতে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া তুলসী পানি পান করা শ্বাসযন্ত্রের উপর প্রশান্তিদায়ক প্রভাব ফেলতে পারে এবং শ্বাসযন্ত্রের অস্বস্তি থেকে মুক্তি দেয়। তুলসিতে শক্তিশালী কফের ওষুধ এবং অ্যান্টিটিউসিভ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা কফের উপসর্গ, জ্বালাপোড়া এবং সর্দি-কাশির লক্ষণগুলিকে মূল থেকে দূর করতে সাহায্য করে।

প্রদাহ কমায়: তুলসীতে উপস্থিত অপরিহার্য তেলগুলোতে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা প্রদাহ এবং সম্পর্কিত উপসর্গগুলো কমাতে সাহায্য করতে পারে।

দাঁতের চিকিৎসায়: দাঁতে যদি খুব যন্ত্রণা হয়, তবে তুলসী পাতার সঙ্গে গোল মরিচ মিশিয়ে বেটে তা দাঁতের যন্ত্রণার জায়গায় চেপে বসিয়ে দিলে যন্ত্রণা কমবে।

জন্ডিস: শরীরে রক্ত হ্রাস পেলে জন্ডিস রোগ হয়। এই রোগটি হলে ৫ গ্রাম তুলসী পাতা, ৫ গ্রাম পানি দিয়ে বেটে খেলে শরীরের হলুদ বর্ণ ভাব কেটে যায় এবং রোগীর রোগ সেরে যায়।