লিভার ক্যানসারের সাধারণ লক্ষণগুলো জানলে অবাক হবেন

লিভার আমাদের শরীরের অন্যতম ব্যস্ত অঙ্গের মধ্যে একটি। এটি আমাদের ‍শরীরের রক্ত যেমন পরিষ্কার রাখে, তেমনি হজমে সাহায্য করে এবং শরীর থেকে সকল টক্সিন বের করতে সহায়তা করে।

কিন্তু যখন এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটিতে ক্যানসার দেখা দেয়, তখন সেটা প্রায়শই তা টের পাওয়া যায় না। লিভার ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণগুলো এতটাই সাধারণ যে আমরা বেশিরভাগ মানুষই সেগুলো গুরুত্ব দেই না। আর যখন লক্ষণগুলো প্রকট হয়ে যায়, তখন যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে যায়।

তাই নিজের শরীরের ছোট ছোট পরিবর্তনের দিকেও নজর রাখা জরুরি। যে কোনো ‍সমস্যাই শুরুতেই শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসার সুফল পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়, লিভার ক্যানসারের ক্ষেত্রেও তাই।

চলুন জেনে নেওয়া যাক লিভার ক্যান্সারের ৮টি প্রাথমিক লক্ষণ, যেগুলো সাধারণ মনে হলেও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে আপনার জন্য-

  • ক্ষুধা কমে যাওয়া: আপনি আগের মতো খেতে ইচ্ছে করছেন না, বা খুব অল্প খেলেই পেট ভরে যাচ্ছে এটি লিভার ক্যান্সারের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
  • অকারণে ওজন কমে যাওয়া: যদি আপনি ডায়েট বা ব্যায়াম না করেও হঠাৎ ওজন কমানো ‍শুরু করে থাকেন, তবে লিভার ক্যান্সারের একটি সম্ভাব্য ইঙ্গিত হতে পারে এটি।
  • পেটের ডানদিকে ব্যথা করা: প্রায়ই পেটের ডান দিকে পাঁজরের নিচে স্থায়ী ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করছেন? এটি লিভারের সমস্যা হতে পারে।
  • বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া: প্রায়ই বমি বমি ভাব হওয়া বা মাঝে মাঝেই বমি হওয়া লিভার ক্যান্সারের প্রাথমিক দিককার লক্ষণ হতে পারে।
  • পেট বা পা ফুলে যাওয়া: লিভারে সমস্যা হলে পেটে তরল জমে পেট ফোলা বা ভারী মনে হতে পারে। এছাড়াও লিভার ক্যান্সার হলে পায়ে পানি জমে পা ফুলে যেতে পারে।
  • জন্ডিস: চোখ এবং ত্বকে হলুদ ভাব দেখা দিলে সেটি জন্ডিসের লক্ষণ, যা লিভারের অসুস্থতার প্রধান চিহ্ন।
  • চুলকানি: কোনো র‍্যাশ ছাড়াই শরীরে তীব্র চুলকানি হলে তা লিভারের সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
  • পায়খানা রঙ হালকা ও প্রস্রাব গাঢ় রঙের হওয়া: পায়খানার রঙ ফ্যাকাসে ও প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হলে সেটিও লিভার ক্যান্সার হবার একটি সতর্কবার্তা।

যে কারণে এই লক্ষণগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি

সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়ে লিভার ক্যান্সারের তেমন কোন লক্ষণ দেখা যায় না। তবে যদি উপরে উল্লেখিত শরীরের এই পরিবর্তনগুলো আপনি লক্ষ্য করেন এবং সময়মতো ব্যবস্থা নেন, তাহলে চিকিৎসায় সুফল পাওয়া সম্ভব।

যা করবেন

এই উপসর্গগুলো যদি ২ সপ্তাহ বা তার বেশি সময় থাকে, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যদি আপনার হেপাটাইটিস বি/সি, অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যাস, ফ্যাটি লিভার, স্থূলতা বা ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে লিভার ক্যান্সারের জন্য নিয়মিত স্ক্রিনিং করান।

এছাড়াও চিকিৎসকের কাছে লিভার ফাংশন টেস্ট, আলফা-ফিটোপ্রোটিন (AFP) টেস্ট এবং আল্ট্রাসাউন্ড/সিটিস্ক্যান/এমআরআই করানোর অনুরোধ করতে পারেন।

যা করবেন না

১. সাধারণত উপরের উপসর্গগুলো উপেক্ষা করবেন না।
২. কোনো ধরনের লিভার সমস্যাকে অবহেলা করবেন না।
৩. অতিরিক্ত মদ্যপান করা থেকে বিরত থাকুন।
৪. ধূমপান এড়িয়ে চলুন।
৫. হেপাটাইটিসের চিকিৎসা বন্ধ করবেন না।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া