চিরতায় মিলবে যেসব উপকারিতা

বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঐতিহ্যগতভাবে ব্যবহৃত একটি বিখ্যাত ভেষজ উদ্ভিদ হলো চিরতা। এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, ওজন কমাতে, হজমশক্তি বাড়াতে এবং লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা, যেমন ব্রণ বা ক্ষত সারাতেও উপকারী এবং রক্তকে বিশুদ্ধ করতেও সাহায্য করে। 

এর স্বাদ অত্যন্ত তিক্ত হলেও রোগ প্রতিরোধে ও শরীরের বিভিন্ন সমস্যায় এটি কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে শতাব্দী ধরে। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক চিরতা খাওয়ার যত উপকারিতা রয়েছে-

চিরতা হলো প্রকৃতির এক আশীর্বাদস্বরূপ ভেষজ উদ্ভিদ, যা নানা রকম স্বাস্থ্য সমস্যায় কার্যকর। বিশেষ করে হজম, জ্বর, চর্মরোগ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক চিকিৎসা উপাদান। চিরতা মূলত কাঁচা ও শুকনো দুইভাবেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে যেকোনো প্রাকৃতিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে যেমন সাবধানতা দরকার, চিরতার ক্ষেত্রেও তাই। নির্দিষ্ট নিয়মে এবং পরিমিত মাত্রায় চিরতা সেবনের মাধ্যমে শরীর ও মনের সুস্থতা নিশ্চিত করা যায়।

চিরতা

চিরতার উপকারিতা

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত চিরতা খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। তবে, ডায়াবেটিসের ওষুধ সেবনকারীদের এটি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ এটি অতিরিক্ত রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। 

ওজন কমানো

চিরতা শরীর থেকে অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। 

হজমশক্তি বৃদ্ধি

এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে এবং হজম সংক্রান্ত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। 

লিভারের সুরক্ষা

চিরতা লিভারকে সুস্থ রাখতে এবং লিভারের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে, যা ফ্যাটি লিভার                                         সহ অন্যান্য লিভারের সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারে। 

ত্বকের স্বাস্থ্য

চিরতার নির্যাস বা পেস্ট ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রণ, ক্ষত এবং সোরিয়াসিস সারাতে কার্যকর। 

ইমিউন সিস্টেম (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা) বৃদ্ধিতে

চিরতায় থাকা বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যাল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে শরীরকে প্রস্তুত রাখে।

কৃমিনাশক

চিরতা প্রাকৃতিক কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে। শিশুদের পেটে কৃমি হলে চিরতা জলে ভিজিয়ে খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়।

চিরতা পাতা

অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে

চিরতায় থাকা আয়রন উপাদান রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে এটি সহায়ক। 

রক্ত পরিষ্কার

এটি রক্তকে বিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে। 

কিডনির স্বাস্থ্য

চিরতার মূত্রবর্ধক বৈশিষ্ট্য কিডনিতে পাথর গঠন প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।  

জ্বর ও সংক্রমণ প্রতিরোধে

চিরতা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণসম্পন্ন। সে কারণে টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া বা ভাইরাল জ্বরের সময় এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং রোগ দ্রুত সারাতে সহায়তা করে।