স্ট্রেস ফ্র্যাকচার কী, যে কারণে নারীদের বেশি হয়

দাঁতের মতোই হাড়েরও যত্ন নিতে হয়। সময় সময় আমরা সেটি ভুলেই যাই। যখন হাড়ে চিড় ধরে বা ভেঙে যায়, তখনই বুঝি তার গুরুত্ব। অথচ সময় থাকতেই হাড়ের যত্ন নেওয়া দরকার আমাদের। কারণ, শুধু বড়সড় দুর্ঘটনা নয়, নিজের অজান্তেই হাড় ক্ষয় হতে পারে।

এই ধরনের ক্ষয়কে স্ট্রেস ফ্র্যাকচার বলা হয়, যা ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে এবং নারীদের ক্ষেত্রে এটি অনেক বেশি দেখা যায়। আসুন জেনে নিই স্ট্রেস ফ্র্যাকচার কী--

এটি হাড়ের এমন একটি ক্ষয়, যা হঠাৎ দুর্ঘটনা বা আঘাতে নয়, বরং দীর্ঘ সময় ধরে নির্দিষ্ট জায়গায় চাপ পড়ার কারণে হয়। শরীরের কোনও একটি অংশে যখন ক্রমাগত চাপ পড়ে যেমন- দৌড়, জগিং, ভারী ব্যায়াম, বা নাচের ফলে। তখন পেশি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে গিয়ে হাড়ে চিড় ধরতে পারে।

বিশেষ করে যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন বা পেশাদার খেলোয়াড়, তাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়।

স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি নারীদেরই কেন বেশি

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ-এর একটি গবেষণা জানাচ্ছে, পুরুষদের তুলনায় নারীরা স্ট্রেস ফ্র্যাকচারে বেশি আক্রান্ত হন। বিশেষ করে মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতির কারণে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাব বা দীর্ঘদিন স্টেরয়েড গ্রহণ করাও এ রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

কখন বুঝবেন আপনি স্ট্রেস ফ্র্যাকচারে আক্রান্ত

চিকিৎসকদের মতে, যদি হাড়ে দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, ফোলাভাব, বা নীলচে দাগ দেখা দেয়—তবে অবিলম্বে এক্স-রে বা এমআরআই করাতে হবে। সময়মতো ধরা না পড়লে সমস্যা বাড়তে পারে।

প্রতিরোধ ও সুরক্ষা কীভাবে করবেন

  • চল্লিশ বছর বয়সের পর থেকে হাড়ের যত্নে ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
  • ব্যায়াম করলে হাড়ের ওপর অত্যধিক চাপ না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম যথেষ্ট পরিমাণে খাদ্যাভাসে রাখতে হবে।
  • প্রয়োজন মতো বিশ্রাম নেওয়া জরুরি।

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বা ব্যায়াম নয়, কারণ ভুল পথে হাঁটলে হাড়ের ক্ষতি আরও বাড়তে পারে। হাড়ের যত্ন শুরু হোক বয়স বাড়ার আগেই- তবেই বাঁচবে জীবন, কমবে ঝুঁকি।