ঈদুল আজহায় শিশুদের যেসব বিষয়ে অবহেলা করবেন না

দীর্ঘ ছুটি এবারের ঈদ উদ্‌যাপনে বেশ অন্য রকম মাত্রা যোগ করেছে। ঈদ করতে বেশিরভাগই পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ছুটবেন। এদিকে দেশজুড়ে ঈদের সময় আবার টানা বৃষ্টিপাত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই এবার ছুটিতে আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে শিশুদেরকে নিয়ে ঈদের পরিকল্পনা করতে হবে অভিভাবকদের।

ঈদযাত্রায় টিকিট পাওয়ার কিছুটা বাড়তি চিন্তা, যানজট—এসব নিয়ে বড়দের যতই ভোগান্তি থাকুক না কেন, শিশুদের থাকে একরাশ আনন্দ। এই আনন্দ মুহূর্তেই মাটি হয়ে যেতে পারে শিশু যদি যাত্রাপথে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই যাত্রাপথে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে সঙ্গে রাখতে হবে পানি, প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার। শিশুর যাত্রাপথে বমির আশঙ্কা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ দিতে হবে। আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে রাখা যেতে পারে ছাতা, বর্ষাতি কিংবা ছোট পাখা।

পশুর হাটে গেলে শিশুদের মাস্ক পরে যাওয়া উচিত। ছবি: সংগৃহীত

আবহাওয়ার সঙ্গে মিলিয়ে শিশুদের জন্য পাতলা, সুতি, বাতাস চলাচল করতে পারে এমন পোশাক নির্বাচন করতে হবে।

অনেক শিশুই বড়দের সঙ্গে হাটে গিয়ে পশু কেনা দেখার বায়না করে। সে ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, যাতে শিশু কিছুতে আঘাত না পায়, অথবা প্রচণ্ড ভিড়ে কোনো সমস্যায় না পড়ে। হাটে গেলে শিশুদের মাস্ক পরে যাওয়া উচিত।

পশু কিনে নিয়ে আসার পর শিশুদের উৎসাহের কমতি থাকে না। তারা চায় পশুটিকে আদর করতে, খাওয়াতে। এ সময় খেয়াল রাখতে হবে, শিশু যেন পশুকে কোনভাবে বিরক্ত না করে। এতে পশুটি বিরক্ত হয়ে বা ভয় পেয়ে শিশুকে আঘাত করতে পারে। পশুর সঙ্গে সময় কাটানোর পর ভালোভাবে শিশুর হাত–পা পরিষ্কার করে দিতে হবে।

কোরবানির জন্য অনেক বাসায়ই নানান রকমের ধারালো ছুরি–কাঁচির মতো জিনিস থাকে। এসব যেন শিশুদের থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখা খুবই জরুরি।

কোরবানির পরে রক্ত ও আশপাশের বর্জ্য সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। এমনিতেই এখন বৃষ্টি হচ্ছে, রক্ত–ময়লা বৃষ্টির পানিতে মিলে জীবাণু জন্মানোর পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে। এতে বড়দের পাশাপাশি শিশুরা ডায়রিয়া, অন্ত্রে প্রদাহসহ বিভিন্ন রোগে ভুগতে পারে।

শিশুর ঈদ আনন্দে কাটুক। ছবি: সংগৃহীত

ঈদ আনন্দে শিশুদের খাওয়াদাওয়ার স্বাভাবিক রুটিন অনেক সময় ঠিক থাকে না। দেখা যায়, হঠাৎ শিশুদের বেশি খাবার দেওয়া হচ্ছে, কখনোবা শিশু কখন কী খাচ্ছে, খেয়াল করা হয়ে উঠছে না। অথবা শিশু অতিরিক্ত মাংস খাচ্ছে কিংবা বাইরের খাবার। এতে শিশু অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। তাই শিশুকে তিন–চার ঘণ্টা বিরতি দিয়ে খাবার দিতে হবে। শিশু যাতে মাংসের পাশাপাশি ঘরে তৈরি অন্যান্য সহজপাচ্য খাবার এবং পরিমিত পানি খায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

ঈদুল আজহায় মা–বাবার ব্যস্ততা একটু বেশিই থাকে বলা চলে, তাই অনেক সময় শিশু কী করছে খেয়াল রাখা সম্ভব হয় না। তাই হঠাৎ ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। এ জন্য খেয়াল রাখতে হবে শিশু যেন আগুন, জলাশয়ের কাছে না যায়; বৃষ্টির সময় নিরাপদ স্থানে থাকে, বৈদ্যুতিক তার থেকে দূরে থাকে। অচেনা জায়গায় অপরিচিত বা স্বল্প পরিচিত কারও সঙ্গে শিশুরা যেন কোথাও না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

সতর্কতা হিসেবে অভিভাবকেরা নিকটস্থ হাসপাতাল এবং পুলিশ স্টেশনের ফোন নম্বর রাখতে পারেন।