অফিসে কাজ করতে করতে প্রায়ই একঘেয়েমি পেয়ে বসে। সঙ্গে সঙ্গে দেখা দেয় মানসিক ক্লান্তি। ফলে কাজের গতি কমে যাওয়া বা আগ্রহের অভাব আমাদের বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই চাকরি বদলের কথা ভাবেন। তবে চাকরি না ছেড়েও কাজের পরিবেশ ও মানসিকতা পরিবর্তন করে একঘেয়েমি কাটিয়ে তোলা সম্ভব।
এসব দূর করতে কিছু সহজ ও বাস্তবসম্মত উপায় রয়েছে। যা আপনার বর্তমান চাকরিকেই আরও অর্থবহ ও প্রাণবন্ত করে তুলতে সাহায্য করবে।
যেতে পারেন নতুন বিভাগে
প্রতিষ্ঠান বদল না করেও বিভাগ বদলাতে পারেন যদি একঘেয়েমি বেড়েই যায়। কোন ধরনের কাজ আপনাকে অনুপ্রাণিত করে, তা আগে বুঝে নিন। তারপর প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ খালি পদগুলোর তালিকা দেখুন। প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ চাকরির বিজ্ঞপ্তি বা খালি পদগুলোর তালিকার দিকে চোখ রাখুন।
বড় কোম্পানিগুলোতে প্রায়ই বিভাগ বদলের সুযোগ থাকে। আর যদি সুযোগ না থাকে, তাহলে ম্যানেজার বা বসের সঙ্গে কথা বলুন-একই বিভাগে নতুন ভূমিকা কিংবা অন্য বিভাগে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করুন।
বারবার সময় না দেখা
একঘেয়ে চাকরিতে বারবার সময় দেখা খুব সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু এতে সময় যেন আরও ধীরে চলে এবং বিরক্তি আরও বেড়ে যায়। এটা যদি আপনার অভ্যাসে পরিণত হয়, তাহলে এখনই পরিবর্তন আনার সময়। কাজের সময় ঘড়ি বা সময় দেখার চেষ্টা না করে অন্য কিছুর দিকে মন দিন। যদি নিজেকে সময় দেখার প্রবণতা থেকে বিরত রাখা কঠিন হয়, তাহলে ডেস্ক থেকে ঘড়ি সরিয়ে দিন বা মোবাইলের সময় লুকিয়ে রাখুন।
কাজ করতে পারেন বাসা থেকে
অফিস যদি রিমোট কাজের অনুমতি দেয়, তাহলে সপ্তাহে ১ থেকে ২ দিন বাসা থেকে কাজ করার অনুরোধ করতে পারেন। যদিও বাসায় কাজ করার সময়ও কিছু সমস্যা ও বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে, তবে এটা পরিবেশের পরিবর্তন একঘেয়েমি কাটাতে সাহায্য করে।
আর যদি বাসায় মনোযোগ কম থাকে, তাহলে কোনো ক্যাফে বা পাবলিক লাইব্রেরিতে কাজ করতে পারেন। এতে বিরক্তি দূর হতে পারে।
কাজের ফাঁকে বিরতি
অনেকেই ডেস্কে বসেই খাবার খান কিন্তু কাজের ফাঁকে বিরতি নেন না। নিয়মিত বিরতি নেওয়া মানসিক স্বাস্থ্য ও কাজের উৎপাদনশীলতার জন্য খুবই জরুরি। কাজের সময় প্রতিদিন একটা লাঞ্চ ব্রেক নিন এবং বাসা থেকে স্বাস্থ্যকর খাবার আনতে পারেন বা বাইরে খেতে যেতে পারেন। লাঞ্চ বা বিরতির সময় বাইরে একটু হেঁটে আসতে পারেন, এতে মন খানিকটা ফ্রেশ হয়ে উঠবে।
এছাড়া প্রতিদিনের কাজের মধ্যে ছোট ছোট বিরতি নিন। অফিসের বাইরে হেঁটে আসতে বা বাইরে গিয়ে একটু দাঁড়াতে পারেন। এগুলোও উপকারী হতে পারে। একঘেয়ে বা পুনরাবৃত্তিমূলক কাজে দীর্ঘ সময় মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন, আর ছোট বিরতি আপনাকে মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করবে।
প্রকল্প বদল করুন
অফিসের কাজে বিরক্তির আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে, চ্যালেঞ্জের অভাব। আপনার কাজ যদি আপনাকে আগ্রহী না করে, তাহলে নতুন দায়িত্ব ও চ্যালেঞ্জিং কাজ বেছে নেওয়ার চেষ্টা করুন। প্রথমে খেয়াল করুন, কোন কোন কাজ সবচেয়ে বিরক্তিকর। তারপর ম্যানেজার বা আপনার বসের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন প্রকল্পে কাজ করার আগ্রহ দেখাতে পারেন, অথবা সহকর্মীদের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করতে পারেন। এছাড়া নিজের আগ্রহের বিষয়ে দক্ষতা বাড়ানোয় মনোযোগ দিন। এতে আপনার ভবিষ্যতে পদোন্নতির পথও তৈরি হতে পারে। সূত্র: উইমেন ক্যারিয়ার