অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

খ্যাতিমান ভারতীয় বাঙালি চিত্রশিল্পী, নন্দনতাত্ত্বিক এবং কালজয়ী লেখক শিল্পাচার্য অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর ৭৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৫ ডিসেম্বর। ১৯৫১ সালের এই দিনে তিনি কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

১৮৭১ সালের ৭ আগস্ট এক সম্ভ্রান্ত ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এই কিংবদন্তি শিল্পী। তিনি ছিলেন প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের প্রপৌত্র এবং মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতা গিরীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৌত্র। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতুষ্পুত্র অবনীন্দ্রনাথ শৈশব থেকেই চিত্রকলার এক সমৃদ্ধ আবহে বেড়ে ওঠেন।

তিনি ১৮৮১ থেকে ১৮৮৯ সাল পর্যন্ত সংস্কৃত কলেজে অধ্যয়ন করেন। অবনীন্দ্রনাথের চিত্রকলার পাঠ শুরু হয় ইতালীয় শিল্পী গিলার্ডির কাছে ড্রয়িং, প্যাস্টেল ও জলরং শেখার মাধ্যমে। পরে তিনি ইংরেজ শিল্পী সিএল পামারের কাছে লাইফ স্টাডি ও তেলরংয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেন।

১৮৯৬ সালে তিনি কলকাতা আর্ট স্কুলের সহকারী অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। ভারতীয়দের মধ্যে তিনিই প্রথম এই সম্মান অর্জন করেন। ১৯১৩ সালে লন্ডনে তার চিত্রপ্রদর্শনী হয় এবং তিনি ইংরেজ সরকারের কাছ থেকে সিআইই (CIE) উপাধি লাভ করেন। ১৯২১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডক্টর অব লিটারেচার (ডি-লিট) ডিগ্রি প্রদান করে। ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত তিনি শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর আচার্যরূপে দায়িত্ব পালন করেন।

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ভারতীয় চিত্রশিল্পের নবজাগরণের অন্যতম স্থপতি হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি ভারতীয় রীতিতে চিত্রশিল্পের নব জন্মদাতা। ভারতীয় রীতিতে তার আঁকা প্রথম চিত্রাবলি ছিল 'কৃষ্ণলীলাসংক্রান্ত'।

১৮৯৭ সালে আঁকা 'শুক্লাভিসার' (রাধার ছবি মাঝে রেখে উৎকীর্ণ কবি গোবিন্দ দাসের পঙ্ক্তিমালা) ছিল পাশ্চাত্য নিয়মের সঙ্গে ভারতীয় রীতির এক নবতর সংশ্লেষণ।

তার বিখ্যাত চিত্রকর্মগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো 'শাহজাহানের অন্তিমকাল', যা মোগল মিনিয়েচারের এক লোকায়ত নিরীক্ষা এবং করুণ রসের এক অপূর্ব প্রকাশ।

শিল্পকলার পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত লেখক। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২৬। আজ এই গুণী শিল্পীর মৃত্যুবার্ষিকীতে জাতি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে তাকে স্মরণ করছে।