কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮৪তম প্রয়াণ দিবস আজ। তার অনবদ্য সৃষ্টির মধ্য দিয়ে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন বাঙালির মনের মণিকোঠায়। তবে ১৯৪১ সালের আজকের দিনে (৭ আগস্ট) সবাইকে কাঁদিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
গত দেড় শতাব্দী ধরে বাঙালির মানসপটে তার দাপুটে অবস্থান। বাঙালির প্রাত্যহিক জীবনের সব কিছুর সঙ্গেই একটু একটু করে মিশে আছেন রবীন্দ্রনাথ! তাকে বাদ দিয়ে বাঙালির চিন্তার ভূগোল, ভাবের প্রকাশ, রস আস্বাদন অসম্ভব। বাঙালি সত্তায় রবীন্দ্রনাথ সদা জাগ্রত। বাঙালি জীবনে যত ভাব-বৈচিত্র্যের সমারোহ, তার পুরোটাই তিনি ধারণ করেছেন তার গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, গান, স্মৃতিকথা ও দর্শনে।
বাংলা সাহিত্যের অসামান্য প্রতিভা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১২৬৮ বাংলা সনের ২৫ বৈশাখ (ইংরেজি ১৮৬১ সালের ৭ মে) পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মা সারদাসুন্দরী দেবী। একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, ভাষাবিদ ও চিত্রশিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য প্রতিভার উন্মেষ ঘটে শৈশবেই। মাত্র আট বছর বয়সে তার লেখালেখির হাতেখড়ি। ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় তার প্রথম লেখা কবিতা ‘অভিলাষ’ প্রকাশিত হয়। এরপর এই লেখালেখি চলে বিরামহীন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রকাশিত কবিতার বই ৫২টি, উপন্যাস ১৩টি, ছোটগল্পের বই ৯৫টি, প্রবন্ধ ও গদ্যগ্রন্থ ৩৬টি এবং নাটকের বই ৩৮টি। কবির মৃত্যুর পর ৩৬ খণ্ডে ‘রবীন্দ্র রচনাবলী’ প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া, ১৯ খণ্ডের রয়েছে ‘রবীন্দ্র চিঠিপত্র’।
১৯১০ সালে প্রকাশিত হয় তার গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ। এই কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
বিশ্বকবির প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সন্ধ্যা সাতটায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট মিলনায়তনে রয়েছে ছায়ানটের অনুষ্ঠান। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমির আয়োজনে হবে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনারকক্ষে বিকেল চারটায় এ অনুষ্ঠান শুরু হবে।