শরতের আগমনী গান ॥ সাঈদ বারী
আকাশ জুড়ে ভেসে বেড়ায় সাদা তুলোর দল,
মাঠের আল ধরে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ দেখি
কাশফুলের ঝাড়-
যেন দুলে ওঠা কোনো গোপন হাসি।
দূরের বাঁশিতে ভেসে আসে বিকেলের সুর,
গরুর ঘণ্টাধ্বনি মিলিয়ে যায় ঝিরঝির হাওয়ায়।
মাটির গন্ধে ভিজে থাকে শ্বাস,
সূর্যের আলো গায়ে পড়ে নরম তুলির মতো।
তখন মনে হয়-
এই নিস্তব্ধ দুপুরের মতোই
তুমি নরমভাবে ঢেকে দাও চারদিক।
কাশফুলের শুভ্র দোলায়
যেভাবে আকাশ গোপন স্নেহ ছড়িয়ে দেয়,
তুমিও তেমন অনায়াসে ভরে দাও হৃদয়।
আবোলতাবোল ॥ শিল্পী নাজনীন
আমি তোমার পথের দিকে চেয়ে
বাউণ্ডুলে মেঘ হয়ে আজ ছুটি
শ্রাবণ আকাশ আবেগ থরোথরো
একাকী তার সঙ্গী হয়ে জুটি
তুমি তবু নিরুদ্দেশে গেলে
পুরোনো সেই স্মৃতির মালা ফেলে
হারালে কোন ধূ ধূ তেপান্তরে
তোমার জন্যে মন যে কেমন করে
বৃষ্টিভেজা এই অবেলায় বসে
মেঘগুলো আজ কান্না হয়ে খসে
আমার এ চোখ নিটোল জলে ভরে
এই অবেলায় তোমায় মনে পড়ে...
কবরদেশে দাদু ॥ তারেক আহসান
কবরদেশে দাদু
তুমি ঘুমাও নীরবতায়
মাটির আঁচলে ঢাকা পড়ে গেছে তোমার দেহ,
কিন্তু আত্মা জেগে আছে আলোর অভিযানে
অদৃশ্য আকাশে, অসীম শান্তির দেশে।
কে বলে তুমি নেই? তুমি তো আছো
তারার ঝলকানিতে, আজানের ধ্বনিতে,
সন্ধ্যার বাতাসে কিংবা সকালের আলোয়।
কবরদেশে দাদু
তুমি কি শোনো আমাদের ডাক?
তুমি কি দেখো চোখের জল, প্রার্থনার অশ্রু?
নাকি মগ্ন আছো তুমি স্রষ্টার সান্নিধ্যে
যেখানে নেই ভয়, নেই দুঃখ, নেই কোনো বিচ্ছেদ।
মৃত্যু তোমাকে নেয়নি হারিয়ে,
বরং দিয়েছে মুক্তি;
তুমি এখন চিরন্তন যাত্রার পথিক,
যেখানে আত্মা খুঁজে পায় সত্যের আলো।
কবরদেশে দাদু
তুমি নেই অথচ আছো
আমাদের সুখে-দুঃখে, আমাদের প্রার্থনায়,
আমাদের প্রতিবিন্দু ভালোবাসায়।