তিন কবির কবিতা

বায়োস্কোপ ॥ মিজানুর রহমান বেলাল

 
এই শহর প্রতিদিন নির্মিত হলেও নির্মাণ হয় না মানুষের মন
ভালো থাকার নামে ভালোভিনয় পোস্টারে ভরে গেছে সব মুখ
উঁচু উঁচু দালানের গ্লাসে একমুঠো রোদ ঝুলে থাকে বারোমাস 
ঝুলে থাকে অল্প বেতনের নয়া কেরানির বোকাসোকা হাসিও

অথচ, একসময় ব্যালকনিতে ঝুলে থাকতো ব্রা, শায়া, প্যান্টি
এখন পোশাকের মতো পুরুষই ঝুলে থাকে হাওয়ার মাস্তুলে

এই শহর প্রতিদিন চিনলেও চেনা হলো একজীবন রহস্যগলি
আলো ধরার নামে দিনশেষে মরা মগজমাছ নিয়ে বাড়িফেরা।

শহরের উঁচু দালানে লেখা কবিতার নাম দিয়েছি প্রিয়তমা;
পা ফাঁক করা গ্রাম্যযুবতির হিসিবৃষ্টির আঁকাবাঁকা আল্পনা...

 

শিশির ও প্রেম ॥ কবীর আলমগীর


হেমন্তের দুর্বাভেজা শিশিরে মনে রেখো
চোখজোড়া শিশির হয়ে তাকিয়ে থাকে
শান্ত ভোরে,
বাতাসে জড়ানো নিঃশ্বাসে তুমিই এক নাম।

মনে রেখো শরতের সাদা কাশফুলে,
তোমার পরশে নেচে উঠি কাশফুল হয়ে
চুলের গন্ধে মেখে রাখি নিঃশব্দ ভালোবাসা।
শ্রাবণের মেঘলা দিনে রেখো মনে
চোখজোড়া হয়ে যায় অপেক্ষার নদী।

প্রেমের স্রোতে খেলে ঢেউ
তোমার নামের অক্ষর।
মনে রেখো শিউলি ফুলের গন্ধে
পড়ে থাকি শিশির ভেজা অবহেলায় ভোরে;
পড়ে থাকি হেমন্তের ঘাসে।
শিশির হয়ে, প্রেম হয়ে।

 

অতীতের খেলাঘর ॥ ফারজানা ইয়াসমিন 


জীবনের অস্থির সময় টেনে নিয়ে যায় শৈশবে, 
অস্পর্শ্য অনুভূতির ছায়া কৈশোরের স্মৃতি চারণ করে। 
যুবতী শস্যের ক্ষেতে দোলা দেওয়া সেই হাওয়া, 
পুকুরে হংসমিথুনের যুগলবন্দী সাঁতার কাটা।
বকুলের সুবাসিত ঘ্রাণ নিয়ে যায় অতীতের খেলাঘরে,
সুতোয় গাঁথা সময় বেলী ফুলের মালায় বেণীতে বাঁধা। 
শিশিরে স্নান করে সবুজবীথি জেগেছে নতুন দিনে,
শিউলি ঝরা সকাল রোদের গায়ে লেপ্টে দাঁড়িয়ে। 
উলে বোনা মায়ের হাতের উষ্ণ চাদর আদর খোঁজে, 
শীতলপাটির আরাম ছুঁয়ে ছোট বেলায় যায় হারিয়ে।