সমৃদ্ধ দেশ ও সমাজ বিনির্মাণে সাংবাদিকদের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তারা বলেন, সাহসিকতা, নৈতিকতা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে সাংবাদিকতার মাধ্যমে অপরাধ, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলাই প্রকৃত সাংবাদিকতার মূল ভিত্তি।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপি নেতা ও ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, এনসিপি’র যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীন, পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) এএইচএম শাহাদাত হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম, ডিএমপি মিডিয়া বিভাগের সহকারী কমিশনার তারেক লতিফ এবং ভারতীয় হাই কমিশনের প্রেস অফিসার তন্ময় সিংহ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এম এম বাদশাহ। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি ফখরুল আলম কাঞ্চন, এস এম আবুল হোসেন, আবুল খায়ের, উপদেষ্টা কামরুল হাসানসহ সাবেক নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা।
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আজকের সমাজে সবচেয়ে বড় সংকট সাহসী সাংবাদিকতার অভাব। সত্য বলার সাহস না থাকলে জাতি হিসেবে আমরা পিছিয়ে যাবো। তিনি একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে বলেন, তিনি নির্যাতনের মুখেও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি থানার ওসির কাছে এলাকার অপরাধীর তালিকা আছে, কিন্তু নানা কালো প্রভাবের কারণে অনেক সময় ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। সাংবাদিকদের দায়িত্ব এসব অনিয়ম তুলে ধরা।
বিএনপি নেতা মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ বলেন, সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। ন্যায়-অন্যায়ের সংঘাতে তারা সবসময় সত্যের পক্ষে ছিলেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।
এনসিপির মুশফিক উস সালেহীন বলেন, বাংলাদেশে সাংবাদিকরা তুলনামূলকভাবে স্বাধীনভাবে কাজ করছেন। তবে এখনও কেউ কেউ রাষ্ট্রীয় এজেন্সির তৈরি রিপোর্ট হুবহু প্রকাশ করেন, যা সাংবাদিকতার নীতির পরিপন্থী।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকার সাংবাদিক নেতারা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও ক্র্যাবের বর্তমান এবং সাবেক নেতৃবৃন্দ।
এর আগে সকালে ক্র্যাব চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়, যা সেগুনবাগিচার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পুনরায় ক্র্যাব কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। পরে বিকেলে কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ক্র্যাব সদস্য ও তাদের পরিবারের জন্য ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।