প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলার সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও হামলাকারীদের সংযত করতে পারেনি বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এমনকি তখন আগুন নেভানোর জন্য নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো রওনা হলে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে হামলাকারীদের লোকজন। ফলে তারাও সময় মতো পৌঁছাতে পারেনি।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এস এন নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘সোয়া ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এই বেআইনী সমাবেশে অনেক লোকজন কয়েক হাজার লোকজন কাওরান বাজারস্থ প্রথমে প্রথম আলোর অফিস পরবর্তীতে ডেইলি স্টার অফিস ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ ভ্যান্ডালিজম লুটপাট ইত্যাদি চালায় যেটা অনাকাঙ্ক্ষিত। এটা আমরা কখনোই কাম্য করি না কিন্তু দুষ্কৃতিকারীরা সবসময় সুযোগের সন্ধানে দেশে একটা অরাজকতা পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করে এবং কতিপয় লোক এই সুযোগে থাকে। কোন জায়গায় একটা ঝামেলা হলে ওখানকার সম্পদ কম্পিউটার টাকা-পয়সা এইটা ওটা লুন্ঠনের ইচ্ছায় তারা অভিপ্রায়ে তারা ওখানে চলে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুলিশ-সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও তাদেরকে সংযত করা যায়নি এমনকি তারা ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো আসতে দেয়নি। রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা করে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো আটকিয়ে রেখেছিল। এইরকম অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল।’
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘আপনারা জানেন যে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। কারণ ওখানে অনেক লোকজন ছিল যারা সরাসরি এ ঘটনার সাথে জড়িত ছিল। একটা ঘটনার প্রতিবাদ বা আউটব্রাস্ট করা এটা একটা আলাদা জিনিস। কিন্তু এই ঘটনার আড়ালে আমি একটা অফিসে গিয়ে আগুন দিয়ে দিব, ভাঙচুর করব, ভ্যান্ডালিজম (ভাংচুর) করব। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত। এইটা যারা করছে ব্যাড ইনটেনশন (খারাপ মানসিকতা) থেকে করেছে। তাদেরকে আমরা অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।’
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার সময় পুলিশ কেন এ্যাকশনে যায়নি তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘কারওরান বাজারের যে ঘটনাটা ওখানে যে অবস্থা ছিল এটার এ অন্তরালে আরও কিছু বিষয় আছে। আমরা যদি ওখানে অ্যাকশনে যেতাম তাহলে গুলি হইতো দুই চারজন মারা যেত পাল্টা তারা পুলিশকে হামলা করতো। আমার ওখানে যে পুলিশ ফোর্স ছিল পুলিশ ফোর্সের ওপর আক্রমণ করতো এবং আমরা জানি না যে তাদের মনের ভেতর কী ছিল। যদি পুলিশ দুই চারজন সদস্য আমার সেদিন নিহত হইতো তাহলে আপনারা জানেন যে পুলিশ জাস্ট এক বছর আগে বিরাট একটা ট্রমা থেকে আমরা তাদেরকে এই পর্যায়ে নিয়ে আসছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সামনে ইলেকশন এই পুলিশের যদি আবার নতুন করে ক্যাজুয়ালটি হয় এই পুলিশটাকে দিয়ে আমি সামনে এগোতে পারবো না। যে কারণে ওখানে আমরা অ্যাকশনে যেতে পারিনি। কোনো হিউম্যান লাইফের কোন এক্সিডেন্ট হয় নাই। এইটা আমি বলব যে এই এত বড় একটা ইনসিডেন্টের আমাদের এটা এচিভমেন্ট। যে কোনো ধরনের ক্যাজুয়ালটি ছাড়া জিনিসটাকে সামাল দেওয়া গেছে। সম্পদ কিছু গেছে ক্ষতি হইছে সেটা হয়তো পূরণ করা সম্ভব। কিন্তু একটা হিউম্যান লাইফ যখন লস্ট হয় এইটা কোনো কিছুর বিনিময়ে আর ফিরে আনা সম্ভব না। যে কারণে আমরা ওখানে অ্যাকশনে যাইনি।’