রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে দ্য ডেইলি স্টার এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট ও উদীচীর কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এই ন্যক্কারজনক হামলায় জড়িত আরও ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে একদল সন্ত্রাসী পরিকল্পিতভাবে প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় এবং ভবন দুটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। একই রাতে ধানমন্ডির ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট ভবনেও হামলা করা হয়। এর পরদিন শুক্রবার রাতে তোপখানা রোডে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সাতজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন- মো. কাশেম ফারুক, মো. সাইদুর রহমান, রাকিব হোসেন, মো. নাইম, ফয়সাল আহমেদ প্রান্ত, মো. সোহেল রানা ও মো. শফিকুল ইসলাম।
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের পাশে থাকার আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টারপুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার মো. নাইম হামলায় অংশ নিয়ে ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা লুট করার কথা স্বীকার করেছেন। লুট করা সেই টাকা দিয়ে তিনি টিভি ও ফ্রিজ কিনেছেন, যা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার রাকিব হোসেন সরাসরি অগ্নিসংযোগে জড়িত ছিলেন এবং তার আইডি থেকে ধ্বংসস্তূপের ছবি তুলে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়েছিলেন। এছাড়া সোহেল রানার বিরুদ্ধে মাদকসহ ১৩টি এবং শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আগে থেকেই অগ্নিসংযোগের মামলা রয়েছে।
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের সব কার্যক্রম বন্ধদেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গত রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বিএনপি নেতা তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন, বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষের নিরাপত্তা এবং শহীদ শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেন। এছাড়া চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনের কাছে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী তিনজনকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করার তথ্য জানানো হয়। প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে যেকোনো মূল্যে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে এবং কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বরদাশত করা হবে না।
