জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে আজ সোমবার। বিকাল ৫টা পর্যন্ত নিজ নিজ আসনের রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ওই সময় পার হওয়ার পর কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন না। এর সময় বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই নির্বাচন কমিশনের (ইসি)।
এদিকে গতকাল পর্যন্ত সারা দেশে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ৩,১৪৪টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে ১৬৬ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাকি সব প্রার্থীর আজ জমা দেওয়ার মধ্য দিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের পর কোন কোন রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তা স্পষ্ট হবে।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগেরদিন রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। তারা প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সন্তানদের আয়কর রিটার্ন দাখিলের বিষয়ে স্পষ্ট করতে ইসিকে অনুরোধ জানান।
এরপরই বিকালে প্রার্থীর স্বামী বা স্ত্রী ও সন্তানদের আয়করের তথ্য প্রদান ঐচ্ছিক করে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়েছে ইসি। তবে তাদের সম্পদের বিবরণ ও আয়ের উৎসের তথ্য জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা বহাল রাখা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসী গ্রেফতার, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আধা সরকারিপত্র (ডিও লেটার) দিয়েছে কমিশন। গত ১১ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন আজ সোমবার। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি। আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২০ জানুয়ারি ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি। আর ভোটগ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে কয়েকটি দল ও ব্যক্তি। তবে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়নি ইসি। বেশির ভাগ বড় রাজনৈতিক দল দাবি জানালেই সময় বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন একজন নির্বাচন কমিশনার। অন্যথায় মনোনয়নপত্র জমার সময় বাড়ছে না।
দেশে সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়েছিল ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি। একই বছরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। দলটির কার্যক্রম এখন নিষিদ্ধ রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো অংশ নেবে কি না-তা স্পষ্ট হবে। একই সঙ্গে কোন কোন দল নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নিচ্ছে তাও কিছুটা পরিষ্কার হবে আজ সোমবার। যদিও চূড়ান্ত তথ্য পাওয়া যাবে আগামী ২০ জানুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে।