২০০ কোটি টাকা পাচার

শামীম ওসমান ও তার স্ত্রী, শ্যালকের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তার স্ত্রী সালমা ওসমান ও শ্যালক তানভীর আহমেদকে আসামি করে প্রায় ২০০ কোটি টাকা পাচারের মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক জালাল উদ্দিন আহাম্মদ বাদী হয়ে ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকালে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম। তিনি জানান, কে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেডের মাধ্যমে তারা এ অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন।

আকতারুল ইসলাম বলেন, অনুসন্ধানের সময় বিটিআরসি থেকে পাওয়া রেকর্ডপত্র ও তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, কে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেড আন্তর্জাতিক কিংবা বৈদেশিক ইনকামিং কল আনা তথা সেবা রপ্তানির জন্য বিটিআরসি থেকে ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) লাইসেন্সপ্রাপ্ত একটি প্রতিষ্ঠান। যার চেয়ারম্যান সালমা ওসমান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আইজিডব্লিউ অপারেটর কে টেলিকমিউনিকেশন্স ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে ৯১ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার ৮৬৫ কল মিনিট সেবা রপ্তানি করে। রপ্তানি করা এ সেবার মূল্য ২ কোটি ৭৪ লাখ ৫২ হাজার ৭৮৬ মার্কিন ডলার। আইন অনুযায়ী ওই বৈদেশিক মুদ্রা রেমিট্যান্স হিসেবে বাংলাদেশে নিয়ে আসার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। 

কিন্তু নারায়ণগঞ্জের আইএফআইসি ব্যাংকের শাখা থেকে পাঠানো কে টেলিকমিউনিকেশন্সের হিসাব বিবরণীতে দেখা যায়, ২ কোটি ৭৪ লাখ ৫২ হাজার ৭৮৬ মার্কিন ডলারের স্থলে ২২ লাখ ৬৯ হাজার ৪২৭ মার্কিন ডলার আনা হয়েছে। আনা হয়নি ২ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৯৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৩ টাকা। তাছাড়া বিটিআরসি থেকেও এ সংক্রান্ত অনুরূপ তথ্য পাওয়া যায়। এ সময়ে আইজিডব্লিউ অপারেটরের চেয়ারম্যান হিসেবে সালমা ওসমান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তানভীর আহমেদ দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

দুদকের এই কর্মকর্তা আরো জানান, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের সহযোগিতায় চেয়ারম্যান হিসেবে সালমা ওসমান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তানভীর আহমেদ দায়িত্বে থাকা অবস্থায় উল্লিখিত আইজিডব্লিউ প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের স্বার্থ থাকা সত্ত্বেও বিদ্যমান মানিলন্ডারিং আইন অমান্য করে ১৯৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৩ টাকা মূল্যের ২ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮ মার্কিন ডলার পাচার কিংবা মানি লন্ডারিং করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তারা পাচারের অপরাধ হয়েছে।