রাজনৈতিক দল গঠন বা পদত্যাগের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তবে সরকারে থেকে কোনো দলে না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব বলেন নাহিদ ইসলাম।
একটি জাতীয় দৈনিকের পদত্যাগ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতিবেদনটি আমার নজরে এসেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও দেখেছি। পত্রিকা আসলে কোন উৎস থেকে এটা করেছে, সেটা পরিষ্কার করেনি। এ ধরনের (পদত্যাগের) সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। যদি হয় তাহলে আমরা নিজেরাই বলব। রাজনৈতিক দলে অংশগ্রহণের পরিস্থিতি হলে, আমরা সরকার ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলে সেটা আনুষ্ঠানিকভাবেই বলব।’
তিনি আরও জানান, সরকারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল আচরণের কথা বলা হয়েছে। জনগণের কাছে তথ্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রে এই সরকার গণমাধ্যমের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে তিনি আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। গণমাধ্যমের ওপর সরকারের নয়, সামাজিক চাপ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
রাজনৈতিক দলে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলে অংশগ্রহণ করার মতো পরিস্থিতি হলে, সরকার ছাড়ার সিদ্ধান্ত হলে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বলব। এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমার জায়গা থেকে কিংবা ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের জায়গা থেকে এখনও হয়নি।’
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, আমাদের বিচার নিয়ে আরও বেশি কথা বলা উচিত। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কাজ চলমান রয়েছে। কোটা আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থান পুরো সময়টিতেই বিচার চাওয়া হয়েছে। যখন আমাদের ভাই-বোন মারা গেছে তখন আমরা বিচার চেয়েছি। শেখ হাসিনাসহ সবার বিচার করা হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি জানান, যারা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ছিল না তারা সাধারণ ক্ষমা পেতে পারে। জুলাই ঘোষণাপত্র ইস্যুতে বিএনপি নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেছে। জলদি তা ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি।
নাহিদ ইসলাম জানান, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজিবী মহলে ফ্যাসিবাদের দালাল তৈরি হয়েছিল। ফ্যাসিবাদকে সহায়তা করাও একটা নৈতিক অপরাধ। নৈতিক এবং সামাজিক বিচারও হওয়া উচিত। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ভিন্নমত থাকতে পারে তবে কোনো অনৈক্য তৈরি হয়নি। জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের ঐক্যের শিক্ষা দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে নানা আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, বিগত সময়ে যেভাবে আন্দোলন দমন করা হয়েছে আমরা সেভাবে করছি না। যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিচ্ছি। ফ্যাসিবাদের দোসররা এর সুযোগ নিলে সরকার কঠোর হবে। তবে আন্দোলনকে কখনও দমনমূলকভাবে থামাতে চাই না।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লগি সরকারের পতনের পর গত বছরের ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। সেখানে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম।