দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শনিবার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এই বৈঠকে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনার কথা জানিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো।
বৈঠক শেষে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তারা সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়েছেন। একই সাথে সরকারকে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে কাজ করার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা।
এমন সময়ে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন বিএনপি রাজপথে কর্মসূচি রেখেছে এবং একই সাথে সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন আর অব্যাহত না রাখার ইঙ্গিতও দিচ্ছে।
আর এই বৈঠকে, প্রধান উপদেষ্টাকে সংস্কার, জুলাই-অগাস্টের গণহত্যার বিচারসহ বেশ কিছু ইস্যুতে আলোচনার কথা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
বৈঠক শেষে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, "যে পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা পদ ছাড়তে চেয়েছেন আমরা তাকে সে অবস্থান থেকে সরে আসার আহবান জানিয়েছি"।
নির্বাচন, সংস্কার ও রোডম্যাপ ইস্যুতে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলীয় অবস্থান স্পষ্টসহ বেশ কিছ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানায় দলটি।
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের ওপর তাদের আস্থা নেই। নির্বাচনের পরিবেশ বা লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। নির্বাচন কমিশন সংস্কার করে যেন সেটা তৈরি করা হয়। তারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনও চেয়েছে।
সম্প্রতি নির্বাচনের রোডম্যাপসহ বেশ কিছু ইস্যুতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে বিএনপির এক ধরনের টানাপোড়েন তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের ইস্যুকে সামনে এনে রাস্তা আটকে আন্দোলন শুরু করে বিএনপি নেতাকর্মীরা।
এছাড়া মিয়ানমারের রাখাইনে ত্রাণ পাঠানোর একটি চ্যানেল কিংবা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিদেশিদের দায়িত্ব দেয়া নিয়েও বিএনপির পক্ষ থেকেও আপত্তি তোলা হয়।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের ইচ্ছা পোষণ করছেন বলে খবর সামনে আসে।
তবে শনিবার একনেক বৈঠকে শেষে উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত এক বৈঠক হয়। এরপর জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না।
অযৌক্তিক দাবি দাওয়া, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও এখতিয়ার বহির্ভূত বক্তব্য এবং কর্মসূচি দিয়ে যেভাবে স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করে তোলা হচ্ছে এবং জনমনে সংশয় ও সন্দেহ সৃষ্টি করা হচ্ছে, তা নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলেও জানানো হয়।
পরে রাতে তিন দলের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সবগুলো দল প্রধান উপদেষ্ঠাকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা।