শেষ হয়েছে ৫৬তম সীমান্ত সম্মেলন

যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) সীমান্ত সম্মেলন। চার দিনব্যাপী ৫৬তম সীমান্ত সম্মেলনে মহাপরিচালক পর্যায়ের এ বৈঠক বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) শেষ হয়েছে।

সীমান্তে বিএসএফ ও ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক নিরীহ বাংলাদেশি নাগরিককে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা ও আহত করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এই সম্মেলনে। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে বিএসএফ মহাপরিচালক অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় রাতের টহল জোরদারের প্রতিশ্রুতি দেন।

সম্মেলনে সীমান্তে চোরাচালান, মানবপাচার, অস্ত্র-গোলাবারুদ ও মাদক প্রবাহ রোধে ‘সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’র ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। উভয় পক্ষ পাচারকারীদের বিষয়ে রিয়েল-টাইম তথ্য শেয়ার এবং সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়।

বিজিবি মহাপরিচালক অবৈধ অনুপ্রবেশ ও মিয়ানমার নাগরিকদের বাংলাদেশে পুশ-ইনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিএসএফ মহাপরিচালক পারস্পরিকভাবে সম্মত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অবৈধভাবে ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর আশ্বাস দেন।

এছাড়া সীমান্ত শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজের মধ্যে পূর্বানুমোদন ছাড়া উন্নয়নমূলক কাজ না করার বিষয়ে উভয়পক্ষ একমত হয়। যৌথ নদী কমিশনের অনুমোদনক্রমে নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ সহজতর করা এবং সীমান্তবর্তী অভিন্ন নদীগুলোতে অননুমোদিত কাজ বন্ধ রাখার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়।

সম্মেলনে তিন বিঘা করিডরের মাধ্যমে দহগ্রামে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক স্থাপন, সীমান্ত এলাকায় সীমান্ত পিলার নির্মাণ, আকাশসীমা লঙ্ঘন প্রতিরোধ এবং সীমান্তে গুজব-অপপ্রচার রোধে গণমাধ্যমকে সচেতন করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

উভয় প্রতিনিধিদল আন্তঃসীমান্তে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি পুনর্ব্যক্ত করে। সম্মেলনের ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে বিজিবি ও বিএসএফ মহাপরিচালক সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে যৌথভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।

বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ২১ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেন। অপরদিকে, বিএসএফ মহাপরিচালক দালজিৎ সিং চৌধুরীর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়।