বিশ্বখ্যাত প্রাণী বিজ্ঞানী এবং পরিবেশবাদী ড. জেন গুডঅল আর নেই। ৯১ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি বক্তৃতার জন্য অবস্থানকালে তিনি স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন। কিংবদন্তি এ প্রাণিবিজ্ঞানী মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শোক বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা গুডঅলকে ‘প্রিয় বন্ধু’ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি আমার প্রিয় বন্ধু, বিশ্ববিখ্যাত প্রাণীবিজ্ঞানী, প্রাইমাটোলজিস্ট, নৃবিজ্ঞানী এবং পরিবেশ আন্দোলনের পথিকৃৎ ড. জেন গুডলের প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি ছিলেন এক অক্লান্ত কর্মী।
ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু জেন গুডল গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের উদ্যোগের প্রতি গভীর আগ্রহ দেখিয়েছিলেন।
জেন গুডঅল ইনস্টিটিউট গত বুধবার (১ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। পোস্টে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুডঅল স্বাভাবিক মৃত্যু বরণ করেন।
একজন ইথোলজিস্ট হিসেবে গুডঅল শিম্পাঞ্জি ও অন্যান্য প্রাইমেট প্রজাতির জীবন-আচরণ ও বিবর্তন নিয়ে যুগান্তকারী গবেষণা করেছেন। তার গবেষণালব্ধ ফলাফলগুলো বিজ্ঞানের রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া তিনি বিশ্বজুড়ে প্রাকৃতিক পরিবেশের সুরক্ষা ও পুনরুদ্ধারে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন।
গুডঅল ১৯৩৪ সালে লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ সালে তানজানিয়ায় প্রাকৃতিক পরিবেশে মুক্তজীবন যাপন করা শিম্পাঞ্জিগুলোর ওপর গবেষণা শুরু করেন। বিশেষভাবে ডেভিড গ্রেবিয়ার্ড নামের একটি শিম্পাঞ্জি পর্যবেক্ষণ করে তিনি দেখান, প্রাণীটি গাছের ডাল দিয়ে হাতিয়ার তৈরি করতে এবং তা ব্যবহার করতে পারে যা মানুষের একক কৃতিত্বের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানায়।
১৯৭৭ সালে তিনি জেন গুডঅল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন, যা প্রাইমেট প্রজাতির প্রাকৃতিক আবাস রক্ষা, প্রাণী ও পরিবেশ সংরক্ষণ এবং তরুণদের প্রকৃতি-সংরক্ষণমূলক কাজে সহায়তা করে। ২০০২ সালে গুডঅল জাতিসংঘের শান্তিদূত হন।
গুডঅলের মৃত্যুতে জাতিসংঘ শোক প্রকাশ করে জানিয়েছে, আজ জাতিসংঘ পরিবার গুডঅলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছে। বিজ্ঞানী, সংরক্ষণবাদী ও শান্তিদূত হিসেবে তিনি গ্রহ এবং এর জীববৈচিত্র্যের জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছেন। মানবতা ও প্রকৃতির জন্য তিনি অসাধারণ উত্তরাধিকার রেখে গেছেন।