১০ অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দিতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, ১০ অক্টোবরের মধ্যে সরকারের কাছে কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দেওয়া হবে এবং ১৫ থেকে ১৬ অক্টোবরের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষরের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার লক্ষ্য রয়েছে। 

বুধবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পঞ্চম দিনের বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা ভিন্নমতের অংশগুলোও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। জুলাই জাতীয় সনদে যেহেতু কিছু ‘নোট অব ডিসেন্ট’ আছে, সেটাকে আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। সবগুলোই একভাবে বিবেচনা করা যাবে, তা আমরা মনে করছি না। কারণ, যেসব রাজনৈতিক দল ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছেন, তারা তাদের অবস্থানের দিক থেকে দিয়েছেন। তাদের শুধুমাত্র দলীয় অবস্থান নয়, আমরা আশা করি তারা অন্যান্য বিবেচনা থেকেও দিয়েছেন।

তিনি বলেন, সব দল একভাবে সম্মতি না দিলেও জনগণের চূড়ান্ত মত নেওয়ার সময় এসব আপত্তির বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে জানাতে হবে। জনগণের সম্মতি নিশ্চিত করার সময় এসব ভিন্নমত যেন যথাযথভাবে জানানো হয়, সেটিই হবে গণভোটের মূল উদ্দেশ্য।

আলী রীয়াজ বলেন, আমাদেরকে দেখতে হবে যে, জনগণের সম্মতির ক্ষেত্রে যেন তারা জেনেশুনেই সম্মতি দিতে পারেন যে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দলের এ বিষয়ে আপত্তি আছে।

তিনি জানান, কমিশন চায় সব দলের মতামত ও আপত্তির পর্যালোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত প্রস্তাব তৈরি করে সরকারকে তা সুপারিশ করতে। তিনি বলেন, আপনাদের পক্ষ থেকে যদি সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট একটি জায়গায় একটি প্রস্তাব আসে, কমিশন সরকারকে সেটাই উপস্থাপন করবে এবং কমিশন চাইবে যে সেটাই বাস্তবায়িত হোক।

তিনি জানান, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মৌলিক ঐকমত্য তৈরি হয়েছে এবং কমিশন এখন চূড়ান্ত কাঠামো নির্ধারণে কাজ করছে।

আলী রীয়াজ বলেন, আমাদের এই প্রচেষ্টায় অনেকদূর অগ্রগতি হয়েছে এই অর্থে যে, গণভোটের ক্ষেত্রে আমরা সকলেই একমত জায়গায় আসতে পেরেছি।

আলী রীয়াজ আরও জানান, ১০ অক্টোবরের মধ্যে সরকারের কাছে কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দেওয়া হবে এবং ১৫ থেকে ১৬ অক্টোবরের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষরের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার লক্ষ্য রয়েছে।

আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, গত বছর যখন আমরা ১১ই সেপ্টেম্বর প্রথম বসি, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে অনেকের মনেই সংশয় ছিল আমরা এক জায়গায় আসতে পারব কিনা। কিন্তু আমরা অনেকদূর পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছি। বাকি পথটা আমরা সকলে মিলে নিঃসন্দেহে অতিক্রম করে এক জায়গায় পৌঁছাতে পারব।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য) মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও আইয়ুব মিয়া।